প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়া, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা

Slider সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

43375_annd

 

ঢাকা; ফেসবুকে বন্ধুদের গ্রুপে ‘আত্মহত্যা’ করার কথা লেখে বছর সতেরোর কিশোরী। শনিবার রাত প্রায় সাড়ে সাতটা। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অরুণা ঘোষ (১৬)-এর দেহ উদ্ধার হল। বহরমপুরের ২ নম্বর বানজেটিয়া এলাকার ঘটনা। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মৃতার এক সহপাঠীকে রবিবার ভোরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বহরমপুরের আইসি শৈলেন্দ্রকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই কিশোররে গ্রেফতার করা হবে। আজ, সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে।’’

মণীন্দ্রনগর গার্লস স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী অরুণার সঙ্গে পাশের স্কুলের এক পড়ুয়ার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কয়েক দিন ধরে ওই কিশোর অরুণাকে এড়িয়ে চলছিল বলে জানা গিয়েছে। ফেসবুকের মেসেজে দু’জনের কথোপথন থেকে তা জানা যায়। শনিবার সন্ধ্যায় দেখা হওয়ার পরে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয় বলেও পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। তার পরেই রাত প্রায় সাড়ে সাতটা নাগাদ ওই কিশোরের আচরণে মানসিক কষ্টের কথা অরুণা ফেসবুকে জানায়। সেই সঙ্গে আত্মহত্যার সিদ্ধান্তের কথাও লেখে। ‘গুড বাই অল’ লিখে বন্ধুদের ‘তোরা সবাই ভালো থাকিস’ বলেও জানায়।

বাড়ির দোতলায় নিজের ঘরে বসে ল্যাপটপে যখন এই সব মেসেজ চালাচালি চলছে, তখন বাড়িতে বাবা দীপ্তিমান ঘোষ এবং মা শম্পা ঘোষ দু’জনেই ছিলেন না। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই তখন গির্জাপাড়ায় গিয়েছিলেন। দুই মেয়ে ছিল বাড়িতে।

কিন্তু অরুণার ছোট বোন পিকু জানায়, দিদি পড়াশোনা করবে বলে তাকে ঘর থেকে বার করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। ঘরের ভেতর থেকে সাড়া-শব্দ না পেয়ে সে ডাকাডাকি করে। পিকু ফোনে বিষয়টি তার বাবাকে জানায়। তারপরেই ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে গলায় শাড়ির ফাঁস দেওয়া অবস্থায় অরুণাকে ঝুলতে দেখেন বাবা-মা। তড়িঘড়ি করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে। চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

পরিবারে সূত্রে জানা গিয়েছে, তখন পর্যন্ত বিছানায় পড়ে থাকা ল্যাপটপে ফেসবুকের পেজ খোলা অবস্থায় ছিল। কথোপথন দেখেই আত্মহত্যার কারণ জানা যায়। বহরমপুর থানায় মৃতের পরিবার ওই কিশোরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করে। শম্পাদেবী বলেন, ‘‘বাবার সামনে মেয়ে কখনও ফেসবুক করত না। কিন্তু বাবা না থাকলেই ল্যাপটপে ফেসবুক খুলে বসে থাকত। কিন্তু কি যে সব হয়ে গেল!’’

আনন্দবাজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *