তামিমকে গুলশান হামলার ‘অনুমতি’ দিয়েছিল আইএস

Slider জাতীয়

edf2a16217da5e77c47256279e99a69d

রয়টার্স; গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিশেষ ভূমিকা ছিল বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই হামলার সন্দেহভাজন পরিকল্পনাকারী, পরে অভিযানে নিহত তামিম চৌধুরীকে হামলার ‘অনুমতি’ দিয়েছিল আইএস।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরী (৩০) ও আইএসের আবু তারেক মোহাম্মদ তাজউদ্দিন কাউসারের (৩৫) মধ্যে যেসব বার্তা বিনিময় হয়েছে, তা দেখেছেন এমন একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তামিমকে বিদেশিদের নিশানা করতে বলেছিলেন তাজউদ্দিন। প্রায়ই বিদেশিরা যাতায়াত করেন—ঢাকার এমন একটি রেস্তোরাঁয় হামলা চালানোর প্রস্তাব করেন তামিম। এই দুজনের মধ্যে যেসব বার্তা চালাচালি হয়েছে, তাতে আইএসের সাময়িকীতে পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত কিছু নিবন্ধের খসড়াও ছিল।

তামিম ও তাজউদ্দিনের এসব বার্তার খবর জানানো পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর নাম প্রকাশে রাজি হননি। আবার রয়টার্স নিরপেক্ষভাবে কথোপকথনের বিষয়টি যাচাই করতে পারেনি।

তথ্যপ্রমাণে দেখা যায়, জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের জন্য সদস্য নিয়োগ এবং অর্থায়নের চেষ্টায় আইএসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বাংলাদেশের স্থানীয় জঙ্গিদের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ গড়ে তোলে, যা আগে অজানা ছিল।

বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ১৬৫ বছরের পুরোনো আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স আরও বলেছে, আইএস তার উৎপত্তিস্থল ইরাক ও সিরিয়ায় চাপের মুখে পড়ায় বাংলাদেশের মতো বাইরের দেশগুলোতে তৎপরতা জোরালো করতে পারে। এই তৎপরতায় গুরুত্বপূর্ণ নিশানা বানাতে পারে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে। এ খাতে লাখো কর্মী নিয়োজিত আছেন। বিদেশে পণ্য রপ্তানি করে অর্জিত আয়ের একটি বড় অংশ আসে এ খাত থেকে।

গত ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন ২২ জন। তাঁদের অধিকাংশই বিদেশি নাগরিক। ওই হামলার আগে বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন ব্লগার ও বিদেশি নাগরিকের ওপর হামলা হয়। সেসব ঘটনায় বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দেয় উদ্বেগ। গুলশান হামলার পর আইএসের অনলাইন সাময়িকী রুমাইয়াহতে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তখন পর্যন্ত দুই ডজন হামলা চালানোর দায় স্বীকার করা হয়। যদিও এসব দাবি নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা যায়নি।

গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে নিহত হন তামিম। এরপর তাঁর সঙ্গে আইএসের তাজউদ্দিনের যোগাযোগের বিষয়ে জানতে পারে পুলিশ। দুজনের মধ্যে বার্তা বিনিময়ের কথা উল্লেখ করে পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, গুলশান হামলার বিষয়ে একটি নিবন্ধের খসড়া তাজউদ্দিনের কাছে পাঠিয়েছিলেন তামিম। তাঁর মৃত্যুর পর সেই নিবন্ধ ছাপা হয় আইএসের সাময়িকী রুমাইয়াহতে।

বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুরে বসবাসকারী তাজউদ্দিনের মা জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। আইএসের সঙ্গে তাঁর ছেলের কোনো যোগাযোগ ছিল কি না, তা তিনি জানেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *