বিআইপিসিএল ব্যবস্থাপকের ধৃষ্টতাপূর্ণ’ বক্তব্যের প্রতিবাদে নাগরিকবন্ধন

Slider গ্রাম বাংলা

img_20161102_131720

সিলেট জেলা প্রতিনিধি :: বিআইপিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্যকে অবিলম্বে ‘রামপাল প্রকল্প’’সহ বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করার দাবি জানিয়েছে সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন। মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সম্মুখে আয়োজিত নাগরিক বন্ধন কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতীয় নাগরিক উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য বাংলাদেশের মাটিতে বসে জাতীয় একটি দৈনিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সুন্দরবন বাঁচানোর আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের ‘এত পণ্ডিত’ বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছেন। যা শিষ্টাচার বহির্ভূত ও দুই দেশের বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক বিরোধী । সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন-এর সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিমের সভাপতিত্বে নাগরিকবন্ধন কর্মসূচি পালনকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আছেন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিমান জ্বালানি বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ ও প্রাণিবিজ্ঞানী। রামপাল বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত তাদের অনেকে বাংলাদেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটেও খ্যাতিমান এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।
বক্তারা আরও বলেন, উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্য, ভারতীয় নাগরিক, ভারত নিযুক্ত কর্মচারী, বাংলাদেশেরও একজন কর্মচারী তিনি-এর বেশি কিছু নন। এরকম একজন কর্মচারী, বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানিত মানুষদের নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলবেন, অসম্মান করবেন আর তা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিনা প্রতিবাদে ছেড়ে দেয়া হবে? আমরা কী এতই আত্মমর্যাদাহীন হয়ে পড়েছি? বক্তারা প্রশ্ন করেন, এমন ঘটনা কি পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে ঘটা সম্ভব? বাংলাদেশের কোনো নাগরিক ভারতে গিয়ে সেদেশের সম্মানিত দূরের কথা, কোনো একজন নাগরিককে অসম্মান করে কথা বললে ভারত সরকারের ও সে দেশের মানুষের প্রতিক্রিয়া কী হতো? নাগরিকবন্ধন কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু, সবুজ সিলেটের বার্তা সম্পাদক ছামির মাহমুদ, উদীচী সিলেটের ইন্দ্রানী সেন, ভূমিসন্তান বাংলাদেশ-এর আশরাফুল ইসলাম, সারী বাঁচাও আন্দোলনের আব্দুল হাই আল হাদী, বাউলশিল্পী বশির উদ্দিন সরকার, চিত্রশিল্পি সত্যজিৎ চক্রবর্তী, গণসঙ্গীত শিল্পী অরুপ বাউল, ক্ষ্যাপা তারুণ্যের আহবায়ক মহসিন আহমদ মুহিন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর বদরুল ইসলাম চৌধুরী ও সুপ্রজিৎ তালুকদার, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট শাখার সভাপতি দিপঙ্কর দাশ গুপ্ত, সামাজিক সংগঠন নিনাই সভাপতি ডা. তায়েফ আহমদ চৌধুরী, সামাজিক সংগঠক আমীন তাহমিদ, বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সমন্বয় পরিষদ ‘চতুষ্টয়’-এর প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়ক শাহ শরিফুদ্দিন।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল করিম কিম বলেন, উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্যের ধৃষ্টতার কারণে ভারতের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখিনি । সরকার এখন পর্যন্ত নীরব। কিন্তু সবার পক্ষ্যে নীরব থাকা সম্ভব নয়, উজ্জ্বল কান্তির ধৃষ্টতায় আমরা সংক্ষুব্ধ। তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে এই ভারতীয় কর্মচারীকে অনভিপ্রেত বক্তব্যের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি বাংলাদেশ থেকে অবিলম্বে উজ্জ্বল কান্তি ভট্টাচার্যকে ‘রামপাল প্রকল্প’ সমেত বিতাড়িত করার দাবি জানান।

.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *