রবিউল ইসলাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরে সদ্য চালু হওয়া সেন্ট্রাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে অভিযুক্ত চিকিৎসক জানিয়েছেন এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু।
মৃত ওই প্রসূতির নাম খাদিজা বেগম (২৩)। তিনি দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার সুন্দইল গ্রামের নুর ইসলামের স্ত্রী।
অভিযোগ উঠেছে, ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাসতুরা বেগম ও ডা. হাফিজ উদ্দিনের ভুল চিকিৎসার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নুর ইসলাম প্রসবজনিত ব্যথায় তার স্ত্রীকে সেন্ট্রাল ক্লিনিকে ভর্তি করেন। এরপরই ডা. মাসতুরা বেগম ও ডা. হাফিজ উদ্দিন তার স্ত্রীর অস্ত্রপচার করেন। অস্ত্রপচারের মাধ্যমে তার একটি কন্যা সন্তান হয়।
এরপর তার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। পেটের ব্যথা বাড়তে থাকে। রাতেই কয়েক ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়। এরপর পরের দিন বুধবার সকাল ৬টার দিকে রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে না জানিয়েই রোগীকে দিনাজপুর জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সকালে সেখানে স্থানান্তর করা হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর তার গ্রামের লোকজনেরা ওই ক্লিনিকের সামনে ভিড় জমায়। পরে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের দুটি পিকআপ অবস্থান নেয়।
নিহতের স্বামী নুর ইসলাম জানান, অসুস্থ হওয়ার পর তার স্ত্রীর সঙ্গে ভালোভাবে কথা বলতে দেয়া হয়নি তাকে। এমনকি তাকে না জানিয়েই অন্য স্থানে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে চিকিৎসকরা। পরে জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশনে স্থানান্তরের পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডা. হাফিজ উদ্দিন জানান, ওই রোগীর ডিআইসি সমস্যা ছিল। প্রথমে এই রোগ ধরা পড়েনি। অস্ত্রপচারের পর বিষয়টি বুঝতে পারেন তারা। তাকে বাঁচানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
এই ঘটনার পর থেকেই মূল অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মাসতুরা বেগম ক্লিনিকে আসেননি। তবে তিনি মোবাইলে জানান, এটি তাদের ইচ্ছাকৃত ভুল নয়। ওই রোগীকে বাঁচানোর জন্য গভীর রাত পর্যন্ত অক্লান্ত চেষ্টা করা হয়েছে।
ক্লিনিকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বদরুজ্জোদা জানান, ওই রোগী ভর্তির সময়ই তার অবস্থা খারাপ ছিল। হাসপাতালে রোগী মৃত্যু এটি বড় বিষয় নয়। হাসপাতালে আসলে সব রোগীই ভালো হয় না। চিকিৎসকরা কখনোই ইচ্ছাকৃত রোগীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় না।
তিনি জানান, একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রুপান্তরিত করতে ২৫ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গত মাসে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই ক্লিনিক চালু করা হয়। ক্লিনিকে সার্জারি, গাইনি, মেডিসিন, স্কিনসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা প্রদান করা হয় এবং এটি রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত বলেও জানান তিনি।