চলচ্চিত্রের প্রিয়মুখ চম্পা। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘লাল দরজা’, ‘টার্গেট’, ‘তিনকন্যা’, ‘লটারি’, ‘বিরহ ব্যাথা’, ‘নিষ্পাপ’, ‘সহযাত্রী’, ‘ভেজা চোখ’, ‘বাপ বেটা ৪২০’, ‘নীতিবান’, ‘কাশেম মালার প্রেম’, ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘অন্যজীবন’, ‘মনের মানুষ’সহ আরও অনেক জনপ্রিয় ছবির অভিনেত্রী তিনি। প্রয়াত পরিচালক শিবলী সাদিক পরিচালিত সুপারহিট সিনেমা ‘তিনকন্যা’ দিয়ে আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রীর চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি এ যাবৎ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নাটকেও অভিনয় করেছেন চম্পা। গত এক বছর পারিবারিক ব্যস্ততার কারণে দেশের বাইরে থাকায় অভিনয়ে তেমন সময় দিতে পারেননি এ অভিনেত্রী। দীর্ঘ সময় পর এ বছরের মা দিবসে একটি নাটকে অভিনয় করেন। এর নাম ‘জেরিন ও জলের গল্প’। প্রীত দত্তর রচনায় নাটকটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন বিশ্বজিৎ দত্ত ও প্রীত দত্ত। নাটকটি প্রচারের পর বেশ সাড়া পান চম্পা। আসন্ন কুরবানী ঈদের জন্য আবারও কাজ শুরু করছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে চম্পা মানবজমিনকে বলেন, এবারের কুরবানী ঈদে মাহফুজ আহমেদের পরিচালনায় ছয় পর্বের একটি কাজ করব। কয়েকদিন পরই কাজটি করতে নেপালে যাব। মাহফুজের নিজের প্রোডাকশন এটি। সহশিল্পী হিসেবে থাকবেন রিয়াজ। এটা ছাড়া আরও দুই-তিনটি নাটকের স্ক্রিপ্ট আমার কাছে এসেছে। এগুলো এখনও দেখা হয়ে ওঠেনি। ভালো লাগলে আরও এক-দুইটা কাজ করতে পারি। বর্তমান প্রজন্মের অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীকেই দেখা যাচ্ছে চলচ্চিত্রে। তবে তারা ঠিক মতো প্রতিষ্ঠা পাবার আগেই ঝড়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে চম্পা বলেন, এজন্য নতুন ছেলে-মেয়েদের দোষ দিব না আমি। এখনকার প্রযোজকরা নতুন ছেলে-মেয়েদের মাথা নষ্ট করে দিচ্ছেন। যখন একটা নতুন ছেলে বা মেয়ে চলচ্চিত্রে আসে তখন তাকে প্রযোজক বা পরিচালকরা কাজ শেখানোর বদলে তার মাথা নষ্ট করে দেন। এই যেমন তাদের বলা হয় ‘তুমি হিরো হয়ে গেছো, তুমি হিরোইন হয়ে গেছো’। একটা ফুল ফোটার আগে এভাবে কলিতেই তারা মেরে ফেলছেন। পরিচর্যা না করে তাদের নষ্ট করে দিচ্ছেন তারা। এজন্য আমাদের গোড়াটা ঠিক করতে হবে। অল্প বয়সে যেভাবে তাদেরকে গড়া হবে সেভাবেই তৈরি হবে তারা। একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী হবার পেছনে তার নিজের চেষ্টার পাশাপাশি একজন প্রযোজক বা পরিচালকের সমান গুরুত্ব রয়েছে। হলে গিয়ে ছবি দেখা প্রসঙ্গে চম্পা বলেন, সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখার মতো অবস্থা এখন আর নেই। দেশের বর্তমান অবস্থায় ঘরের কোণে বসে থাকতে হবে। চারিদিকে একটা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। তাই কাজ ছাড়া বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না। অনেকদিন পর পরিবারসহ কয়েকদিন আগে বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে একটি ইংরেজি অ্যানিমেশন ছবি দেখেছি। বেশ ভালোই উপভোগ করেছি ছবিটি। বাংলাদেশের ছবি কি সিনেমা হলে গিয়ে দেখা হয় না? এমন প্রশ্নের জবাবে চম্পা বলেন, না অনেকদিন সিনেমা হলে গিয়ে বাংলা ছবি দেখা হয়নি। আমার অভিনীত ছবি ‘আরো ভালোবাসবো তোমায়’ও দেখিনি সিনেমা হলে গিয়ে। এখনকার চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এ সময়ে চলচ্চিত্রের গল্পে অনেক পিছিয়ে আছি আমরা। কি ছবি দেখবো, সেই প্রাচীন আমলের টিনএজ প্রেমের মধ্যেই আটকে আছি আমরা। গল্পে তেমন বৈচিত্র্য নেই। এসব থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। তবে আমার বিশ্বাস, চলচ্চিত্রের সুদিন একদিন ফিরবেই। চম্পা অভিনীত একটি ছবি মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত এ ছবির নাম ‘নকশিকাঁথার মাঠ’। সেটাও অনেকদিন হয়ে গেল। এই ছবির বর্তমান খবর কি জানতে চাইলে চম্পা বলেন, ‘নকশিকাঁথার মাঠ’ ছবির কাজ শেষ করেছি। বর্তমানে এ ছবির সংগীত সংযোজনের কাজ চলছে। দেশের বাইরে যাওয়ার আগে এর কাজ শেষ করেছি। এ ছবির গল্পটি খুবই সুন্দর। আশা করছি, খুব শিগগিরই এটি মুক্তি পাবে। নতুন ছবির বিষয়ে চম্পা জানালেন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর একটি ছবিতে কাজের কথা চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে তার ছবিতে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। এর আগেও তার ছবিতে অভিনয় করেছি।