ঢাকাসহ সারা দেশের ঘরে ঘরে খালেদা জিয়ার কার্যালয় তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, বিএনপির একটি কার্যালয় (খালেদার কার্যালয়) সরিয়ে দিয়ে বিএনপিকে স্তব্ধ করা যাবে না। ঢাকাসহ সারা দেশের ঘরে ঘরে খালেদা জিয়ার কার্যালয় তৈরি হবে। সারা দেশে বিএনপির প্রতিটি কার্যালয় হলো খালেদা জিয়ার কার্যালয়। সেটা কোথাও আবাসিক এলাকাতে, আবার কোথাও বাণিজ্যিক এলাকায়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ ও যুবদলের সভাপতি এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ছেলের সুস্থতা কামনায় গতকাল দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদল আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আব্বাস বলেন, কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস কোন এলাকায় থাকবে, সরকার থেকে এমন কোনো দিক-নির্দেশনা কখনও দেয়া হয়নি। সংসদেও এমন কোনো আইন পাস হয়নি। কোনো রাজনৈতিক নেতার বাসভবনে তার অফিস থাকবে, রাজনৈতিক কার্যালয় থাকবে, এটি তো হতে পারে না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশবাসীকে এমন কোনো গ্যারান্টি কি দেওয়া হবে যে, গুলশান থেকে খালেদা জিয়ার কার্যালয় সরিয়ে দিলে দেশে আর কোনো ঘটনা ঘটবে না। এমনকি ক্রসফায়ারেও কেউ খুন হবে না। গুলশান থেকে দেশনেত্রীর কার্যালয় সরানোর পরেও যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে এর দায়িত্ব কে নেবে? তিনি বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ায় সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। গুলশানের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার অফিস ওখান থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে। আমি কিছুক্ষণ আগে শুনলাম। এখনো টেলিভিশনে দেখিনি। তা যদি হয়, তাহলে আমার প্রশ্ন হলো-কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় যে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটলো, তার প্রেক্ষিতে ওখান থেকে কি বিএনপির অফিস সরিয়ে দেবেন? কিংবা সারা দেশে বিএনপির যে অফিসগুলো আছে, সবগুলোই কি সরিয়ে দেবেন? মির্জা আব্বাস বলেন, যে যেভাবে পারছে বিএনপির ওপরে সুযোগ নিচ্ছে। সরকার ভাবছে, পানি ঘোলা করা হয়েছে মাছ শিকার জন্য। বিএনপির কর্মীদের বিভিন্নভাবে ধরা হচ্ছে, গুম-খুন করা হচ্ছে। সেটির তো খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে না। যে ঘটনাই ঘটুক, যত দোষ নন্দ ঘোষ। আর এখন খালেদা জিয়া অফিস সরাতে হবে। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন না, বিরোধী দলগুলোকে নিঃশেষ করার জন্য এসব কিছু করছে সরকার। সরকারকে গ্যারান্টি নিশ্চয়তা দিতে হবে যে গুলশান থেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় সরানো হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না। সারাদেশের জঙ্গি ও যে কোন হামলা বন্ধ হয়ে যাবে। তাহলে আমরা কার্যালয় সরিয়ে নেব। গয়েশ্বর রায় প্রশ্ন রেখে বলেন, জঙ্গিরা কি সরকারকে বলেছে- আমরা গুলশান ছাড়া আর কোথাও হত্যাকাণ্ড চালাবো না? আসলে বিএনপি ও বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করার জন্যই গুলশান থেকে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় সরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, কূটনৈতিক এলাকায় যেমনিভাবে নিরাপত্তা দেওয়া দায়িত্ব তেমনি জনগণের নিরাপত্তা দেয়াও সরকারের দায়িত্ব। রাজনৈতিক কার্যালয় গুলশান থেকে সরিয়ে দিলে জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ হয়ে যাবে সরকারের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি হয়েছে কী-না এটা জানা দরকার। বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালাম আজাদের সভাপতিত্বে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির আবেদ রাজা, বেলাল আহমেদ, যুবদল সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান, আবদুল খালেক, আবদুল বারী ড্যানী, ফারুক আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক আবদুল খালেক হাওলাদার, অমলেন্দু দাস অপু, কেএম জোবায়ের এজাজ, গোলাম রাব্বানী, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) কাজী রফিক, সহ-দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল, সারওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সহ-সভাপতি শরীফ হোসেন ও উত্তরের সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।