একের পর এক ইঞ্জিন বিকল ও বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ওয়াটার বাস সার্ভিস। গত এক সপ্তাহ ধরে গাবতলী থেকে সদরঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে না কোনো যাত্রীবাহী ওয়াটার বাস। এমনকি সদরঘাট থেকেও যাচ্ছে না। যাত্রীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন ওয়াটার বাসের দেখা না পেয়ে। রোববার গাবতলী পর্বত ব্রিজের পাশের ঘাটে গিয়ে দেখা যায় বেশ কয়েকজন যাত্রী ঘাটে অপেক্ষা করছেন। যাত্রীরা কেউই জানেন না ওয়াটার বাস সার্ভিস বন্ধ। লঞ্চ ঘাটের বন্ধ টিকিট কাউন্টারের সামনে ফুচকা বিক্রেতা স্বপন মিয়া জানান, সময়মতো ওয়াটার বাস না ছাড়ায় শনিবার বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা কাউন্টার মাস্টারদের পিটিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। মানিকগঞ্জ থেকে আসা আসাদুল বিশ্বাস আশিস নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, মানিকগঞ্জ থেকে বাবুবাজার যাতায়াত করি ব্যবসার প্রয়োজনে। গাবতলীর পর থেকে গাড়িতে জ্যাম হয় বলে ওয়াটার বাসে করে যাতায়াত করি। এতে সময় কম লাগে। কিন্তু আজ যে ওয়াটার বাস আসবে না এটা জানা ছিল না। আবুল কালাম নামের অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি গাবতলী এলাকায় ব্যবসা করি। বিভিন্ন প্রয়োজনে বাবুবাজার যাওয়া লাগে। সব সময়ই ওয়াটার বাসে যাতায়াত করি। কিন্তু বন্ধ হয়ে গেছে এটা জানতাম না। কাউন্টারের সামনে ব্যানারে দেয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে কদমতলী ঘাট থেকে আলী আশরাফ নামের এক চালক জানান, আমাদের একটি জাহাজও ভালো নেই। যে কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে চালাতে পারছি না। শনিবার একটি ছাড়া হলেও গাবতলী ছেড়ে মাঝ নদীতে এসে ইঞ্জিন বিকল হয়ে সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। কবে নাগাদ জাহাজগুলো মেরামত করে আবার চালু করা সম্ভব হবে সে বিষয়েও কিছু বলতে পারেননি তিনি। উল্লেখ্য, রাজধানীর যানজট নিরসনের জন্য ২০১০ সালের আগস্টে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি ওয়াটার বাস উদ্বোধন করে বিআইডব্লিউটিসি। সদরঘাট-গাবতলী নৌপথে এমএল বুড়িগঙ্গা ও এমএল তুরাগ নামের এ দুটি ওয়াটার বাস উদ্বোধন করেন নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। পরে যাত্রীদের বাড়তি চাপ মোকাবিলায় ২০১৪ সালের নভেম্বরে রুটে যোগ করা হয় আরো ৬টি ওয়াটার বাস। প্রতিটি বাসের আসনসংখ্যা ছিল ৩৫টি। গাবতলী-সদরঘাটের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৪০ টাকা। অপরদিকে গাবতলী থেকে টাউন সার্ভিসের যাত্রীবাহী বাসের ভাড়া ৩০ টাকা। তবে জানজটমুক্ত ও দ্রুত গন্তেব্যে পৌঁছাতে পারার কারণে অনেক যাত্রী ১০ টাকা বেশি দিয়ে ওয়াটার বাসে যাওয়া আসা করেন সদরঘাট। মানিগগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়াসহ দূর-দূরান্তের যাত্রীরা এসে গাবতলী থেকে সদরঘাটে যাওয়া-আসা করেন ওয়াটার বাসে।