বন্দুকযুদ্ধ ৭২ ঘণ্টায় নিহত ৯

Slider জাতীয়

 

17797_f2

 

 

 

 

 

 

গত ৭২ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৯ জন। সর্বশেষ বুধবার রাতে রাজধানীতে র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২ জন এবং গাইবান্ধায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরো ১ জন নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর তুরাগ এলাকায় চেকপোস্টে তল্লাশি চালানোর সময় মোটরসাইকেল আরোহী তিন সন্ত্রাসীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এতে নজরুল ইসলাম (৩৭) নামে একজন নিহত হয়েছেন। প্রায় একই সময় রামপুরা বালুর মাঠ এলাকায় একইভাবে গুরুতর আহত হন কামাল পারভেজ (৪০)। রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। অপরদিকে মধ্যরাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাতপরিচয় কথিত জঙ্গি সদস্য মারা গেছে।
পুলিশ ও র‌্যাব সূত্র জানায়, গত বুধবার রাতে তুরাগ এলাকার প্রত্যাশা ব্রিজের কাছে র‌্যাব চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছিল। এক পর্যায়ে মধ্যরাতে তিন মোটরসাইকেল আরোহী ওই চেকপোস্টের কাছে আসলে থামার জন্য যথারীতি সংকেত দেয়া হয়। কিন্তু মোটরসাইকেলটি না থামিয়ে দ্রুত চেকপোস্ট অতিক্রমের চেষ্টা চালায়। এসময় তাদের একজন পিস্তল বের করে র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালালে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যায়। বাকি দুজন পালিয়ে যায়। রাত পৌনে দু’টায় তাকে টঙ্গী ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়া হলে মৃত বলে জানান চিকিৎসকরা। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়। নিহত নজরুল ইসলাম পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের উপ-পরিদর্শক খগেন্দ্র চন্দ্র সরকারও র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
এদিকে গত বুধবার একই রাতে রামপুরা থানার বালুর মাঠ এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কামাল পারভেজ (৪০) নামে অপর এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন র‌্যাব সদস্যরা। পরে রাতে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পারভেজ বরিশাল জেলার গৌরনদী এলাকার কালু খলিফার ছেলে। তিনি উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টর ও ১০ নম্বর রোডের ৩৩০/এ নম্বর বাসায় থাকতেন। তবে তার ভাই নাজিম উদ্দিন বাবু বলেছেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং তাকে এমনিতেই গুলি করে মারা হয়েছে।
একই রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জেএমবি ও পুলিশের গুলি ও পাল্টা গুলিবিনিময়ে অজ্ঞাতনামা এক জেএমবি সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গোলাবারুদসহ দেশে তৈরি অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মোজাম্মেল হক জানান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামের জেএমবি জাহাঙ্গীরের বাড়িতে কিছু জেএমবি সদস্য সংগঠিত হয়ে নাশকতার উদ্দেশে গোপন বৈঠক করছে। এ সংবাদে রাত ১টায় সেখানে একটি পুলিশ দল অভিযান চালায়। এসময় জেএমবি সদস্যরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের উদ্দেশে গুলি চালায়।  পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে  জেএমবি সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাতনামা এক জেএমবি সদস্যের লাশ উদ্ধার করে।
এছাড়া, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গত সোম ও মঙ্গলবার রাতে আরো ৬ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে শিবগঞ্জের বুড়িগঞ্জের জামতলী ব্রিজের কাছে বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে নিহত হন কাউসার আলী (২৫)। তিনি জেএমবি সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। একই রাতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আরো একজন পুলিশের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছে। আগের দিন সোমবার রাতে রাজধানীসহ অন্যান্য স্থানে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আরো ৪ জন মারা গেছে। এর মধ্যে রাজধানীর পল্লবীতে তারেক হোসেন মিলু (৩৫)। তবে তার পরিবার জানিয়েছে বন্দুকযুদ্ধে নয়, বরং নিখোঁজের এক মাস পর তাকে মেরে ফেলা হয়েছে এবং গণমাধ্যমে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করে পরিবার। একই রাতে রাজধানীতে সুলতান মাহমুদ (৪২) নামে অপর এক ব্যক্তি বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। ওই দিন কথিত বন্দুকযুদ্ধে রাজশাহীতে জামাল উদ্দিন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রুবেল মিয়া (২৮) নামে অপর একজন নিহত হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *