রক্তের বিনিময়ে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যারা গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন তারাই দেশ পরিচালনা করছেন। গনতন্ত্র উদ্ধারে যারা শহীদ হয়েছেন আমরা তাদের মৃত্যু দিবসও পালন করি গনতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে। তাহলে এখন কোন গনতন্ত্র উদ্ধারের জন্য রক্ত বইছে? কথায় কথায় খুন এটা কোন লক্ষন। এই লক্ষন তো বিপদ সংকেত দিচ্ছে। কারণ এখন তো গনতন্ত্র উদ্ধার করার সংগ্রাম নেই। তাহলে কেন আমরা রক্তপাত করছি। মানুষের গুলিতে মানুষ মরছে। যারা মানুষকে নিরাপত্তা দিবে তারা নিরাপত্তা দিতে গিয়ে মানুষ খুন করছেন। নিরাপত্তা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে খুন হতে হচ্ছে রাষ্ট্রের মালিককে।
মানুষ মানুষকে খুন করছেন, অপহরণ করছেন। পশুবৃত্তির কারণে কিছু মানুষরুপী জানোয়ার মেয়েদের ধর্ষন বা গণধর্ষন করে নৃশংসভাবে হত্যা করছে। হত্যার ঘটনার মধ্যে অনেক ঘটনা রাষ্ট্রযন্ত্রের আশ্রয়ে থেকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হচ্ছে। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে খুন হতে হচ্ছে। এটা কিসের আলামত!
সাম্প্রতিক সময়ে তনু হত্যা, ঢাবির ছাত্র সুজন হত্যা, ভ্যান চালক হত্যা, কেরানীগঞ্জে শিশু হত্যা, চলন্ত বাসে গার্মেন্ট কর্মী গণধর্ষন, দুই দিন আটকে রেখে পোষাক কর্মীকে গণধর্ষন ও সবশেষে বাঁশখালীতে ৬জন খুন সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।
রাষ্ট্রের মালিক জনগন। জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করতে ভোট দিয়ে ৫ বছর পর পর একটি সরকার গঠন করবেন। কাজ ভাল না করলে পরিবর্তন করবেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে জনগন তাদের ভোট দিতে গিয়ে খুন হয়ে যাচ্ছেন। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখছেন তাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে। তাহলে ওই ভোট কিসের জন্য? এটা কি গনতন্ত্রের ভোট!
১৯৯৬ সালে বেগম জিয়া জোর করে ৪৮ আসনে ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা ১৫৩ আসনে ভোট ছাড়া জনপ্রতিনিধি করে ক্ষমতায় আছেন। ১৯৯০ সালে সৈরাচার বলে এরশাদের হাত থেকে গনতন্ত্র উদ্ধার করেছিলেন ওই দুই নেত্রীর নেতৃত্বে একটি জোট। পরবর্তি সময় যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি ও সৈরাচার এরশাদকে নিয়ে আওয়ামীলীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিচালনা করে। এমনকি ওই দুই দলকে জাতীয় পতাকাও উপহার দেয়।
তাহলে প্রশ্ন এসে যায়, আপনারা কেন এরশাদের সৈর শাসনের প্রতিবাদ করে গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনলেন। আপনাদের মনে যদি এই থেকে ছিল তবে কেন ৯০ এর আন্দোলন করলেন? রক্তপাত সৃষ্টি করলেন?
বর্তমান পরিস্থিতি বলে দিচ্ছে যে, জনপ্রিয় দুই নেত্রীর মন পরিস্কার ছিল না তখন। জনগন যদি আপনাদের মনের খবর জানতেন তবে ৯০ সনে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলতেন না। তাই এখনো সময় আছে মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষা করেন। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। না হলে জনগন আপনাদের অবিশ্বাস করে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিবেন। তখন আর অনুশোচনা করে কোন লাভ হবে না।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইনচীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম