খুলছে মগবাজার-সাতরাস্তা ফ্লাইওভারের দ্বার

Slider জাতীয়

 

 

 

2016_03_29_22_37_53_YgVPGBDagSwFEywGvXk9diPC98BvNb_original

 

 

 

 

 

ঢাকা : দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মগবাজার-মৌচাক নিমার্ণাধীন ফ্লাইওভারের একটি অংশ  বুধবার খুলে দেয়া হচ্ছে। রাজধানীর সাতরাস্তা মোড় থেকে হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত ২ দীর্ঘ কিলোমিটার এই অংশটি বুধবার (৩০ মার্চ) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন।

উদ্বোধনের পর থেকেই যান চলাচলের জন্য ফ্লাইওভারটি খুলে দেয়া হবে। এছাড়া বাকি দুই অংশসহ পুরো ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে চালু হবে। মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, দ্বিতীয় ধাপে ফ্লাইওভারটির বাংলামোটর-মৌচাকমুখি লেনটি আগামী ডিসেম্বরে ও শেষ ধাপে রাজারবাগ শান্তিনগরের দিকের অংশটি আগামী বছর জুনে খুলে দেয়া হবে। এরপর বাংলামোটর থেকে মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগ হয়ে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে গিয়ে শেষ হবে। আরেকটি ধাপে রামপুরা রোড থেকে মৌচাক হয়ে শান্তিনগর গিয়ে শেষ হবে।

১ হাজার ২১৮ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার এ ফ্লাইওভারটি রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিটি পিলার ১৫০ মিটার গভীর। ফ্লাইওভারটির বিভিন্ন জায়গায় আটটি বড় মোড় রয়েছে এবং তিনটি রেলক্রসিং রয়েছে। বাংলামোটর থেকে শুরু হয়ে মৌচাক পর্যন্ত দুই দশমিক দুই কিলোমিটার ফ্লাইওভারের পিলার ও পাইলিংয়ের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ফ্লাইওভারের ওপরের অংশ নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ।

তিন লেনবিশিষ্ট এ ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য আটটি পথ থাকবে। এতে ফ্লাইওভার থেকে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামোটর, মগবাজার, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং শান্তিনগর মোড়ে ওঠানামা করা যাবে।

জানা গেছে, মগবাজার-মৌচাক ও মৌচাক-হাজিপাড়া-কাকরাইল ফ্লাইওভার প্রকল্প দু’টি গত ২০১১ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৪ সালের নভেম্বরে। তবে ড্রয়িং-ডিজাইনসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি সরবরাহে সমন্বয়ের অভাব ও সঠিক নকশা পরিবর্তন করায় অতিরিক্ত আরো দুই বছর সময় ব্যয় হচ্ছে।

প্রথমে এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি টাকা। যা এখন বেড়ে হাজার কোটি টাকার ওপরে চলে গেছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শেষে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার কথা ছিল। এখন ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এলজিইডির সূত্র জানায়, ৮ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ ফ্লাইওভার নির্মাণে প্রথমে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন রয়েছে ২০০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এছাড়া সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) থেকে ৩৭৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা ও ওপেন ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি) থেকে ১৯৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ঋণ হিসেবে নেয়া হয়েছে।

 

প্রকল্পটির দু’টি প্যাকেজের জন্য ২০১২ সালের নভেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে এলজিইডি। ডব্লিউ-৪ প্যাকেজের ২ দশমিক ১ কিলোমিটারের ঠিকাদার হিসেবে কাজ পায় ভারতের সিমপ্লেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ও দেশীয় নাভানা কন্সট্রাকশনের যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান সিমপ্লেক্স-নাভানা জেভি। ডব্লিউ-৬ প্যাকেজের ২ দশমিক ২ কিলোমিটার অংশের ঠিকাদার চীনের মেটালারজিক্যাল কনস্ট্রকাশন ওভারসিজ কোম্পানি (এমসিসিসি) ও দেশীয় তমা কনস্ট্রাকশন।

এদিকে প্রকল্প অনুমোদিত থেকে প্রায় ৪৪৬ দশমিক ১৯ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ২১৮ দশমিক ৮৯ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত ৪৪৬ দশমিক ১৯ কোটি টাকা খরচের মধ্যে জিওবি ব্যয় ২৪১ দশমিক ২৬ কোটি টাকা, পরামর্শক বাবদ ব্যয় ১৬ কোটি টাকা এবং ফ্লাইওভার নির্মাণ বাবদ ২৫৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া তেজগাঁও-পান্থপথ লিংক রোড এফডিসি গেটের পরিবর্তে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত ৪৫০ মিটার ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। এতে করে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত যাচ্ছে ফ্লাইওভারটি। এ খাতে ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় ৮ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ফ্লাইওভার, ৩ হাজার ৮৪৩ দশমিক ৭০ বর্গমিটার অবকাঠামো নির্মাণসহ দু’টি ডাবল কেবিন পিকআপ কেনা হয়। এছাড়া ৪০ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *