সিলেট ব্যুরো
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
সিলেট অফিস: এবার সাংবাদিকদের সম্পর্কে চরম আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী।
আদিবাসী দিবস উপলক্ষে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আজ শনিবার এক আলোচনা সভায় মন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি ক্ষিপ্ত সাংবাদিকদের উপর ছিলেন।
মঞ্চে ওঠেই তিনি মাইক নিয়ে সাংবাদিকদের অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগের নির্দেশ দেন। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকরা সেখানে থেকে গেলে বক্তৃতার সময় তিনি অকথ্য ভাষায় ক্ষোভ ঝাড়েন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকদের ঠিক করতে নীতিমালা হয়েছে। ওই দিন কেবিনেট মিটিংয়ে আমি থাকলে সাংবাদিকদের …. (অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতাম। সাংবাদিকদের এখন এমনভাবে ঠিক করা হবে যাতে নিজের স্ত্রীকে পাশে নিয়েও শান্তিতে ঘুমাতে পারবে না। সাংবাদিকরা বদমাইশ, চরিত্রহীন, লম্পট।’
বক্তব্য চলাকালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর শিষ্টাচার বহির্ভূত এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা।
এ সময় অনুষ্ঠানস্থলে হট্টগোল শুরু হলে মহিলা সংসদ সদস্য কেয়া চৌধুরী ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে করজোড়ে মাফ চান। কিন্তু সমাজকল্যানমন্ত্রী তার অশ্লীল বক্তব্য চালিয়ে গেলে সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান বয়কট করে চলে আসেন।
বক্তব্যের শুরুতে সাংবাদিকদের ছবি তুলে অনুষ্ঠানস্থল থেকে চলে যেতে বলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, যতদিন দুনিয়া থাকবে ততোদিন ফজরের নামাজের পর মসজিদে কোরআন শরীফ পাঠ হবে। মাদরাসা শিক্ষায় আরবির পাশাপাশি বাংলা-ইংরেজি শিক্ষা না দিলে তারা পিছিয়ে পড়বে।
মন্ত্রী বলেন, আমি একটি অনুষ্ঠানে এরকম কথা বলেছিলাম, কিন্তু সাংবাদিকরা আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করেছে। একটি জাতীয় দৈনিকের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন- আজ ওই পত্রিকা লিখেছে তারা আমাকে লাল পানি খাওয়াবে। ওই পত্রিকা আমাদের গর্ব অর্থমন্ত্রী সম্পর্কেও আজেবাজে লিখেছে।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা আমাকে ডেকে বলেছেন, হাসানুল হক ইনু ১৪ দলের নেতা, আর তুমি আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা। সাংবাদিকরা যা ইচ্ছে লেখুক, তাতে কিছু যায় আসে না। তুমি চালিয়ে যাও।
মন্ত্রীত্বের পরোয়া করেন না- এমন দম্ভোক্তি করে মহসিন আলী বলেন, মন্ত্রীত্ব থাকলেই কী, আর না থাকলে কী? জনগণ আমাকে ভালোবাসে, আমিও জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বাঁচতে চাই।
সাংবাদিকরা অল্পশিক্ষিত উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমার মেয়ে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স। আর যারা পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি করে তারা দু’এক কলম পড়ালেখা করেছে। আমি বলি একটা, তারা লিখে আরেকটা। দুই টাকা খেয়ে তারা আমার … (অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতে চায়। আমার শ্বশুর বাড়ি সিলেটে। সাংবাদিকদের পেছনে সিলেটের মানুষ লেলিয়ে দিতে আমার সময় লাগবে না। সাংবাদিকরা আমার … (অকথ্য শব্দ) ছিঁড়তে পারবে না।
এদিকে, মন্ত্রীর অশালীন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক এক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।