পদাসীন হতে ‘সিলেট টু বনানী’ দৌড়ঝাঁপ

Slider রাজনীতি

bnp_sm_439672035

 

 

 

 

সিলেট: আরমাত্র আটদিন পর (৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সম্মেলন। দীর্ঘ প্রত্যাশিত এ সম্মেলনকে ঘিরে সিলেট বিএনপিতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তৃণমূল থেকে জেলার শীর্ষ পর্যায়ে নেতাদের কাছে দৌঁড়ঝাপ চলছে সভাপতি ও সম্পাদকীয় দু’টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের।

শুধু মাত্র জেলা পর্যায়ে-ই এ দৌঁড়ঝাপ থেমে নেই। চলছে সিলেট-টু ঢাকাস্থ বনানী পর্যন্ত। পদাসীন হতে নেতারা ধর্না দিচ্ছেন নিখোঁজ বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পদক এম. ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনার কাছেও। কেননা এম. ইলিয়াস আলী গুমের পর অন্তরালে থেকে সিলেট বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন ইলিয়াস পত্মী লুনা।

সর্বশেষ ২০০৯ সালে ইলিয়াস আলীর উপস্থিতিতে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইলিয়াস নিখোঁজের ৪৫ মাস অর্থ্যাৎ প্রায় চার বছর পর অনুষ্টেয় সম্মেলনকে ঘিরে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা।

এবারের সম্মেলনে তিনটি পদের বিপরীতে (সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক) সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন- সিলেট জেলা সভাপতি পদে জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম  এবং কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাহের শামীম। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট শাসমুজ্জামান জামান ও জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহমদ।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি কারাবন্দি নেতা আবদুল আহাদ খান জামাল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট হাসান পাটওয়ারী রিপন ও জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মইনুল হক।

এছাড়া মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকি প্রার্থী হচ্ছেন। সাধারণ সম্পাদক পদের বিপরীতে বর্তমান কমিটির সদস্য সচিব বদরুজ্জামান সেলিম, সিটি কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রার্থী হচ্ছেন।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মহানগরের আহবায়ক কমিটির বর্তমান সদস্য আজমল বখত সাদেক, সাবেক সাংগঠনিক হুমায়ূন কবির শাহীন, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, মিফতা সিদ্দিকী, সিটি কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদীর নাম আলোচনায় রয়েছে । দলীয় একাধিক সূত্রে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দলের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, নেতৃত্ব নির্বাচনের ফলাফল রাজধানীতে নয়, বরং সম্মেলনের পরেই যেনো ঘোষণা করা হয়।

‘ভোট দেবো আমরা, ফলাফল টেবিলেই চাই। কেন্দ্রে গিয়ে ফলাফল ঘোষণা করলে মানবো না।’ এমন মন্তব্য করেন সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন সাহেদ।

তিনি বলেন, সব সময় দেখা যায় দলের পরিক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে কেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এরকম হলে ভোট-ই দেব না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, ইলিয়াস আলী গুমের পর যারা রহস্যজনক ভূমিকায় থাকা কতিপয় নেতা শুধুমাত্র পদ পেতে সম্মেলনে প্রার্থী হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন এমন নেতাদের ভোটাররা প্রত্যাখ্যান করবেন।

সিলেট মহানগরীর ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিটি কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন  বলেন, দলের বিপর্যয়ে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, দলকে সুসংগঠিত করতে তাদেরকে পদায়ন করা প্রয়োজন।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান বলেন, সরকার বিরোধী ও ইলিয়াস মুক্তি আন্দোলনে যারা অগ্রভাবে ছিলেন ও ভবিষ্যতে যারা দলের স্বার্থে মাঠে থাকবেন নেতৃত্বে তারাই আসবেন।

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (নিখোঁজ) ইলিয়াস আলী ২০০৯ সালে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালে এপ্রিল মাসে ওই দুটি কমিটি বিলপ্তি ঘোষণা করে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো।

সিলেট জেলা বিএনপির ১৭টি ইউনিটের তিনজন করে ৫১ জন নেতা এবং মহানগর বিএনপির ২৭টি ওয়ার্ডের ৩ জন করে ৮১ কাউন্সিলর। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে আয়োজিত সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এদিন সকালে জেলা ও বিকেলে মহানগর বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *