সম্পাদকীয়: অবশেষে চোখ থাকিতে অন্ধ

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা নারী ও শিশু ফুলজান বিবির বাংলা বাংলার আদালত বাংলার মুখোমুখি বাধ ভাঙ্গা মত সারাদেশ সারাবিশ্ব

নগস

জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা কার্যকর হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি পুরো না পড়লেও যে কেউ কমপক্ষে এই টুকু জেনেছেন সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা বে-আইনী। যে কোন কাজের সমালোচনা ওই কাজটির বিরুদ্ধে যাবে এটি স্বাভাবিক। কোন কাজে ভূল হলে সমালোচনা বিরুদ্ধে যাবে আর কাজটি সঠিক হলে প্রশংসা আসবে। কিন্তু সমালোচনায় প্রশংসা আসে না। কাজ সঠিক হলে তো সমালোচনা হয় না। তাই অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বর্তমান সরকার মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রন করতে গিয়ে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা করেছেন এটি পরিস্কার।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯নং অনুচ্ছেদ বলে গণমাধ্যম কাজ করে। তবে ওই অনুচ্ছেদেও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সংরক্ষন করা হয়েছে। সদ্য কার্যকর হওয়া নীতিমালায় যে কথাগুলো বলা হয়েছে তা সংবিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ন। তবে অসঙ্গতিপূর্ন হলো যে, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে ফৌজদারী আদালতে সরাসরি মামলা করার ক্ষেত্রে সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদ রক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করতো। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা হওয়ার কারণে ওই অনুচ্ছেদ আর তেমনভাবে অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না। কারণ সরকার আত্মরক্ষার জন্য গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করতে সংবিধানের আলোকে কিছু কিছু শব্দ নিয়ে ও আরো কিছু যোগ করে নিজেদের মত করে আইন করেছে।

ফলে গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসলে তার বিচার যে ভাবে সম্পন্ন করা হবে তা প্রায় ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারের সামিল। এতে করে সরকার যদি স্বৈরাচারী হয় তবে গণমাধ্যমের পক্ষে দেশ, জাতি ও জনগনের স্বার্থে কোন কথা বলা ঝুঁকিপূর্ন হয়ে যাবে। কারণ গণমাধ্যম সরকারের বিরুদ্ধে যায় এমন কোন সংবাদ দিতে পারবে না।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি রক্ষকের ভূমিকায় থেকে ভক্ষক হয়ে যায় তবেও গণমাধ্যম তা লিখতে পারবে না। কারণ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সরকারের অংশ। বিনা বিচারে কাউকে যদি আটক রাখা হয় বা মেরে ফেলা হয় তবুও গণমাধ্যম ভূমিকা নিতে পারবে না কারণ সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলা গণমাধ্যমের জন্য বে-আইনী হবে।

সার্বিক দিক বিবেচনায় বলা যায়, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা অবারিত হওয়ার কথা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে গণমাধ্যম আর সত্য প্রকাশ করতে পারবে না। বাংলাদেশর বর্তমান অবস্থায় গণমাধ্যমের মালিকানা রাজনৈতিক বিবেচনায় চলে যাওয়ায় এমনিতেই গণমাধ্যম কর্মীদের হাত পা রাজনৈতিক শৃঙ্খলে বাঁধা পড়ে আছে। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা কার্যকর হওয়ার ফলে হাত পা বাঁধার পর চোখ বাঁধা হয়ে গেলো বলেই মনে হচ্ছে। যদি তাই হয় তবে গণমাধ্যম কর্মীরা কি চোখ থাকিতে অন্ধ নয়!

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *