বিপিএল চ্যাম্পিয়ন মাশরাফির কুমিল্লা

Slider খেলা

index

 

 

 

 

 

শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে বরিশাল বুলসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান সংগ্রহ করে বরিশাল বুলস। ১৫৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে মাশরাফির কুমিল্লা।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই হয়েছে কুমিল্লার। প্রথম ওভারে আট রানের পর দ্বিতীয় ওভারে ১৩ রান পেয়ে গেছে মাশরাফির দল। তবে তৃতীয় ওভারে প্রথম সাফল্যের আনন্দে মেতে উঠেছে বরিশাল বুলস। লিটন দাসের (৩) ফিরতি ক্যাচ নিয়েছেন মোহাম্মদ সামি।

দলীয় ২৩ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর কুমিল্লাকে ভালোভাবে এগিয়ে নিচ্ছিলেন অন্য ওপেনার ইমরুল কায়েস ও আহমেদ শেহজাদ। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছেন দুজনে। ২৪ বলে ৩০ রান করা শেহজাদকে আউট করে বরিশাল বুলসকে স্বস্তি এনে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ইমরুলকে ফেরানোর কৃতিত্বও বরিশাল অধিনায়কের।

রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ৬৭ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে সহজ জয় এনে দিয়েছিলেন ইমরুল। বিপিএলের ফাইনালেও এই বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাটে ঝড় উঠেছিল। পায়ের পেশির চোট উপেক্ষা করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিচ্ছিলেন তিনি। তবে অর্ধশতকের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩৭ বলে তিনটি ছক্কা ও ছয়টি চারে ৫৩ রান করে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দিয়েছেন ইমরুল।

ইমরুলের বিদায়ের পর একটি করে চার ও ছক্কা মেরে কুমিল্লাকে আশার আলো দেখিয়েছিলেন আশার জাইদি। তবে ১৬ রান করে রানআউটের খাঁড়ায় কাটা পড়েছেন পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডার।

শেষ দুই ওভারে ছয় উইকেট হাতে নিয়ে ২৩ রান প্রয়োজন ছিল কুমিল্লার। ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে ড্যারন স্টিভেন্স (৮) আর মাশরাফিকে (০) ফিরিয়ে বরিশালকে উল্লাসে ভাসিয়ে দিয়েছেন কেভন কুপার। এর মধ্যে মাশরাফির ক্যাচ অসাধারণ দক্ষতায় তালুবন্দি করেছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে সেই ওভারের শেষ দুই বলে চার মেরে কুমিল্লার আশা টিকিয়ে রেখেছেন অলক কাপালি।

সামির করা শেষ ওভারে ১৩ রান করতে হতো মাশরাফির দলকে। প্রথম বলে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান শুভাগত হোম। দ্বিতীয় বলে বাই রান হওয়ায় স্ট্রাইক পেয়েছেন অলক। তৃতীয় বলে অলকের চমৎকার পুল চার রান এনে দিয়েছে কুমিল্লাকে। চতুর্থ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে আবার চার। পঞ্চম বলে দুই রান নেন অলক। শেষ বলে এক রান দরকার। ফাইন লেগে বল ঠেলে এক রান নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েন অলক। ২৮ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থেকে তিনিই শেষ পর্যন্ত কুমিল্লার জয়ের নায়ক। হেরে গেলেও মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও জ্বলে উঠে ২৩ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন বরিশালের অধিনায়ক।

এর আগে মাহমুদউল্লাহর ৪৮ ও শাহরিয়ার নাফীসের অপরাজিত ৪৪ রানের দুটো চমৎকার ইনিংসের সুবাদে চার উইকেটে ১৫৬ রান করেছে বরিশাল বুলস।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬৮ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে বরিশাল। কিন্তু সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও শাহরিয়ার নাফীস মিলে দলীয় স্কোরকে ১৪৯ পর্যন্ত টেনে নেন। এরপর ইনিংসের শেষ ওভারে নুয়ান কুলাসেকারার বলে ব্যক্তিগত ৪৮ রানে আউট হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত নাফীস ৪৪ ও কেভিন কুপার ৭ রানে অপরাজিত থাকেন। এ ছাড়া মেহেদী মারুফ ১১, সেকুজি প্রসন্ন ৩৩ ও সাব্বির রহমান ৯ রান করেন।

বল হাতে কুমিল্লার মাশরাফি, জায়িদি, কুলাসেকারা ও স্টিভেন্স ১টি করে উইকেট নেন।

বিপিএলের দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজা ও  মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।  মাশরাফি বিন মর্তুজা ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসকে এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চিটাগং ভাইকিংসকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।  সে ম্যাচে মাশরাফির হাতে উঠে বিপিএলের শিরোপা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *