প্যারিস হামলার ২ সন্দেহভাজন প্রবেশ করেছেন শরণার্থী হিসেবে

Slider বিচিত্র

101503_newboatmigrants-619447

প্যারিস হামলার সন্দেহভাজন ২ ব্যক্তির নাম শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত রয়েছে গ্রিক কর্তৃপক্ষের কাছে। এ বছরের শুরুর দিকে তারা শরণার্থী হিসেবে গ্রিসে ছিলেন। এরপর প্রবেশ করেন ফ্রান্সে। গ্রিক পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও রয়টার্স। খবরে বলা হয়েছে, দুই সন্দেহভাজনের আঙ্গুলের ছাপ ও তাদের একজনের সিরিয়ান পাসপোর্ট যাচাই করতে গ্রিক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায় ফ্রান্স। জবাবে গ্রিস নিশ্চিত করে যে, এদের নাম ও তথ্য শরণার্থী হিসেবে গ্রিসে লিপিবদ্ধ আছে। গত কয়েক বছর ধরে ইউরোপে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার সহ বিভিন্ন দেশের বিপুল মানুষ প্রবেশ করে। এদের বেশিরভাগই গ্রিস হয়ে প্রবেশ করেছেন।
শুক্রবার রাতে প্যারিস হামলার অন্যতম ঘটনাস্থল স্টাডে ডি ফ্রান্সে একটি সিরিয়ান পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। গ্রিসের নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রী নিকোস তোসকাস এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা নিশ্চিত করছি যে, ওই পাসপোর্টের মালিক গ্রিক দ্বীপ লেরোস হয়ে ৩রা অক্টোবর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিয়ম মোতাবেক শরনার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হন।
অপরদিকে ফরাসি পুলিশ বলেছে, সিরিয়ান পাসপোর্ট পাওয়া গেছে ব্যাটাক্লাঁ কনসার্ট হলে পড়ে থাকা ‘এক হামলাকারীর মৃতদেহের পাশে’। ব্যাটাক্লাঁ কনসার্ট হলেই সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে প্রায় ৮২ জনকে। প্রাপ্ত পাসপোর্টটির বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তবে এ পাসপোর্টের প্রাপ্তির ফলে হামলার সঙ্গে সিরিয়ান কারও সংশ্লিষ্টতারই ইঙ্গিত দেয়। শুধু পাসপোর্টের ব্যক্তিই নয়, অপর এক হামলাকারীর আঙ্গুলের ছাপ নিরীক্ষা করে দেখা যায়, তার নামও গ্রিসে শরণার্থী হিসেবে নিবন্ধিত। গ্রিস পুলিশের একটি সূত্র এ তথ্য দিয়েছে। স্থানীয় টিভি স্টেশন মেগা বলছে, এ ব্যক্তিও গত আগস্টে লেরোসে ছিলেন।
ইউরোপের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অনেকদিন ধরেই শঙ্কিত ছিলেন যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে যে বিপুল অভিবাসী ইউরোপে প্রবেশ করছে, এর ফায়দা লুটতে পারে জঙ্গিরা। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য তাদের আশঙ্কাকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে। এতে অভিবাসন নীতি কড়াকড়ি সহ শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার নীতিতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে ইউরোপ। নিউ ইয়র্ক টাইমসও এক নিবন্ধতে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, অসংখ্য শরণার্থী ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করার শুরুতে দেশগুলোর অনেকেই স্বাগত জানালেও, ক্রমেই তারা শঙ্কিত হয়ে পড়ছিলেন। সুইডেন, জার্মানির মতো অনেক উদারপন্থী দেশও ধৈর্য্য হারিয়ে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে, ঝুলিয়ে দিয়েছে আরবিতে লেখা সতর্কবার্তা। দেশগুলোর জনমত সরে যাচ্ছিল সরকারী অবস্থান থেকে। জার্মানিতে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল এ ইস্যুতে নিজ দলেই ব্যপক বিরোধীতার সম্মুখীন হয়েছেন। আর তার ওপর ঘটলো প্যারিস হামলা, যেখানে সিরিয়া ও শরণার্থী সংযোগ পাওয়া গেছে। তাই শরণার্থীদের সাময়িক সুপ্রসন্ন ভাগ্য যে দ্রুতই মিলিয়ে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *