শিবগঞ্জে আড়াই হাজার রেশম তাঁত বন্ধ

অর্থ ও বাণিজ্য
10917893_1586310234843177_2785436532876773338_n
কয়েক শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী শিবগঞ্জ উপজেলার রেশম তাঁত শিল্প একেবারে হারিয়ে যেতে বসেছে। এই শিল্প নানা সমস্যায় জর্জরিত। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁতীরা গুটিয়ে নিচ্ছেন তাদের ব্যবসা। উপজেলার শিবগঞ্জ সদর, চতুরপুর, হরিনগর, বিশ্বনাথপুর, রাধাকান্তপুর ও নয়ালাভাঙ্গা এলাকায় প্রায় ৪ হাজার তাঁত রয়েছে। তাঁতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের অন্যান্য সময়ের চেয়ে বর্তমানে কয়েকগুণ বেশি পুঁজির জোগান দিতে হচ্ছে। কিন্তু লভ্যাংশের পরিমাণ খুবই কম। পূর্বের মতোই রয়ে গেছে লাভের পরিমাণ। অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছে অতিরিক্ত পুঁজি যোগাড়ে। তাই অতিরিক্ত পুঁজি যোগাড়ে ব্যর্থ হয়ে অর্থাৎ অতিরিক্ত পুঁজির অভাবে প্রায় আড়াই হাজার তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়াও কাঁচা মালের সরবরাহ একেবারে কমে গেছে। কাঁচা মাল বলতে রেশম সুতা। পূর্বে রেশম সুতার দাম ছিল অনেক কম। হাত বাড়ালেই দেশের অন্যতম বৃহত্তম পোলু ও সুতা উৎপাদনকারী এলাকা ভোলাহাট থেকে পাওয়া যেত সুতা। ১০ বছর আগেও যে দাম ছিল বর্তমানে তা বেড়ে প্রায় আড়াইগুণ হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম থেকেই এক কেজি সুতা কিনতে অতিরিক্ত দেড় হাজার টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। তাঁত থেকে তৈরি বলাকা রেশম সুতা এখন কয়েকগুণ বেশি পয়সা দিয়েও মিলছে না। পাশাপাশি ঘাটতি পূরণে চোরাকারবারিরা মাঝে মধ্যেই রেশম সুতা আনলেও দাম নাগালের বাইরে। কিন্তু সে তুলনায় সুতার দাম কয়েকগুণ বাড়লেও কাপড়ের দাম বাড়েনি। শিবগঞ্জের একজন প্রখ্যাত রেশম তাঁত ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে জনকণ্ঠকে জানান, ঢাকার কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত কাপড় কমদামে নিয়ে গিয়ে চড়া দরে বিক্রি করলেও তাদের কমমূল্য দিচ্ছে। উৎপাদনের খরচ আসে না। বাধ্য হয়ে রেশম কাপড় উৎপাদনকারী তাঁতীরা বিপাকে পড়ে তাদের তাঁত বন্ধ করে দিচ্ছেন। এ অবস্থায় শিবগঞ্জে প্রায় পাঁচ হাজার দক্ষ রেশম তাঁত কারিগর বা শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *