আন্দোলন থাকলে তাদের মতো করবে, আমাদেরকে কেন জিম্মি করা হবে?

Slider বাংলার মুখোমুখি


‘আন্দোলন করবে, দাবি পেশ করবে ভালো কথা। কিন্তু আমরা তো সাধারণ মানুষ। আমরা তো কোনো অপরাধ করিনি। আমাদের কেন ভোগান্তির মধ্যে ফেলবে’— এমন প্রশ্ন ট্রেনের সাধারণ যাত্রীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাজধানীর মহাখালীতে রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীরা। অবরোধের ফলে বিকেল থেকে ঢাকা-টঙ্গী-ঢাকা সেকশনের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে এই সেকশন দিয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে কোনো ট্রেন আসতে বা ছেড়ে যেতে পারছে না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যাত্রী ভোগান্তি চরমে উঠেছে।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন যাত্রীরা। স্টেশন ম্যানেজারের রুমের সামনে হইচই করে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর বিরক্ত প্রকাশ করছেন তারা। এদিকে ট্রেনের যাত্রা বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে।

সরিষাবাড়িগামী যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আল-আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ট্রেন বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। এখন পর্যন্ত বসে আছি, ট্রেন ছাড়ার কোনো নাম নেই। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জন্য নাকি ট্রেন বন্ধ রয়েছে। ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে কিনা স্টেশনের কেউ জানে না।

তিনি বলেন, নিরাপদ জেনেই আমরা ট্রেনকে বেছে নিই। কিন্তু কয়েকদিন পরপরই ট্রেন বন্ধ করে আন্দোলন করা হয়। যাতে করে আন্দোলনকারীদের কাছে আমরা তো জিম্মি হয়ে যাচ্ছি। আমাদের কি এখান থেকে মুক্ত করার কেউ নেই?

কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী নাজমুল হাসান জানান, অনেক দূর পথের ভ্রমণ। এজন্য বাসের চেয়ে ট্রেনের যাত্রাটাই নিরাপদ মনে করেছিলাম। অফিসিয়াল কাজে আমার সেখানে আগামীকাল সকালে থাকার কথা। এখন এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, ট্রেনে যেতে পারব কিনা সেটাও জানি না। এটা বাদ দিয়ে এখন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে আবার বাস খুঁজে যাওয়া খুব ভোগান্তির একটা কাজ।

তিনি বলেন, আমরা তো সাধারণ যাত্রী। আমাদের জিম্মি করে, ভোগান্তিতে ফেলে এমন আন্দোলন করে কি সুখ পাচ্ছে তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীরা। আমরা তো কোনো অপরাধ করিনি। তাদের আন্দোলন থাকলে, সেটা তাদের মতো করে করবে। আমাদেরকে কেন জিম্মি করা হবে?

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব ট্রেন ঢাকায় ঢোকার শিডিউল ছিল সেসব ট্রেনকে টঙ্গী, পুবাইল ও জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে রাখা হয়েছে। সিগন্যাল পেলে ট্রেনগুলো ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবে। এছাড়া বিকেল তিনটা ৪০ মিনিটের পর আর কোনো ট্রেন ঢাকা স্টেশন ছেড়ে যায়নি।

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন রাত সোয়া ৮টার দিকে জানিয়েছেন, এখনো ট্রেনের যাত্রা বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তারা এখনো ট্রেন চালানোর অপেক্ষায় আছেন। এরও আগে তিনি জানিয়েছেন, আপাতত ঢাকা-টঙ্গী-ঢাকা সেকশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।

সার্বিক বিষয় জানতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) ও ঢাকার চিফ ট্রেন কন্ট্রোলারের অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া মেলেনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *