জামায়াত নেতারা হাসতে হাসতে ফাঁসির কাষ্ঠে গেছেন, মাথা নত করেননি

Slider বাংলার মুখোমুখি

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সত্যের পথে অবিচল। অন্যায়ের কাছে মাথা নত করিনি আমরা। বহু ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, আমাদের নেতৃবৃন্দ হাসতে হাসতে ফাঁসির কাষ্ঠে গেছেন, কিন্তু মাথা নত করেননি। বহু রং-বেরঙের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সমস্ত প্রস্তাব এবং ষড়যন্ত্র ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেন? কারণ আমরা আল্লাহকে ভয় করি।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে নাটোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক সুধী সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এই দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসি। যারা দেশ এবং দেশের মানুষকে ভালোবাসবে তাদের হাত কখনো অন্যের সম্পদে যেতে পারে না। তাদের কাছে মানুষের জীবন, সম্পদ ও ইজ্জত সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। আমাদের (জামায়াতের) ভেতরে যদি এর ব্যতিক্রম থাকে অবশ্যই আপনারা আমাদের সমালোচনা করবেন।

তিনি বলে, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত এত রক্ত, জীবন। এতো মানুষ পঙ্গু হলো, চাকরি হারালো, ঘর ছাড়লো, দেশ ছাড়ল। এতো মানুষের ইজ্জতের ওপর হাত পরল, তারপরও কি আমাদের এই জাতির শিক্ষা হবে না? তাহলে, এই শিক্ষা যারা নেবে না আমরা তাদেরকে সমর্থন করতে পারি না। একজন চাঁদাবাজ কখনো রাজনীতিবিদ হতে পারে না।

জামায়াতের আমির বলেন, যে জাতি বিভক্ত হয় তার মাথার ওপরে সবাই কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার চেষ্টা করে। আমাদের এই জাতির মাথার ওপরে ৫৩ বছর কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া হয়েছে। আমাদের তরুণ সমাজ, জনগণ জেগে উঠেছে। আমরা আর চাই না, কেউ আমাদের মাথার ওপরে কাঁঠাল ভেঙে খাক। আমাদের জোরালো ঐক্য থাকুক, তাহলে ঘরে ও বাইরে সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে।

জাতীর উন্নয়নে দক্ষ ও যোগ্য সংসদ সদস্যের প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত সংসদগুলোতে আমরা দেখেছি, কিছু মানুষ তাদের ছেলে-মেয়েরা এক পাতা লিখে দিয়ে বলেছে, আব্বা/আম্মা তুমি তো বলতে পারবে না কিছু, এইটা পড়ে শুনিয়ো। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে পড়ছেন, কিন্তু এক পাতা পড়তে তার ২০ মিনিট লাগছে এবং ৪০টা ভুল করছেন। অথচ একজন সংসদ সদস্যের দায়িত্ব আইন প্রণয়ন করা। যিনি লিখিত একটা পাতা পড়তে পারেন না তিনি আমাদের আইন প্রণয়ন করে দেবেন? এভাবে আমরা নাচে-গানে ভরপুর সংসদ দেখেছি, খিস্তিখেউড়ের সংসদ দেখেছি। সেখানে গানের আসর দেখেছি, নাটক ও হাসিঠাট্টা দেখেছি।

তিনি বলেন, সংসদ মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য, সভ্য দেশকে সভ্যতার উচ্চ শিখরে নিয়ে যাওয়ার জন্য, একটা মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য। এ ছাড়া আইন শাসন কায়েমের ও সুশাসন উপহারের জন্য সংসদ। কিন্তু সেগুলো নিয়ে আমাদের সংসদে কথা হয় খুব কম, হয় না বললেই চলে।

তিনি আরও বলেন, যদি ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম হয় এই জাতি বদলাতে সাত থেকে ১০ বছরের বেশি সময় লাগবে না। ৫৩ বছরের দরকার হবে না। সাত থেকে ১০ বছরই যথেষ্ট।

নাটোর জেলা আমির অধ্যাপক মীর নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দিনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *