দিল্লি পালিয়েছেন পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


‘আমি পালিয়ে যাইনি। পালাবও না। আমি দেশেই ছিলাম, দেশেই আছি। ভবিষ্যতে দেশেই থাকব। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারি বাসায় ফিরিনি।’ গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা পোস্টকে এমনটাই বলেছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এসবি) মনিরুল ইসলাম।

তবে শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবস্থান করছেন। তবে কীভাবে সেখানে গিয়েছেন, সেটি স্পষ্ট না করলেও দেশ ছাড়ার বিষয়টি নিজেই ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে প্রবাসী বাংলাদেশি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, দেশ থেকে পালিয়েছেন পুলিশের সাবেক প্রভাবশালী কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।

তিনি ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, পলাতক এসবি প্রধান (সাবেক) মনিরুল ইসলামের অবস্থান নিশ্চিত করেছে অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্র। ভারতের রাজধানী দিল্লির কানঘট প্লেসের একটি গ্রোসারি স্টোরে রোববার বিকেলে মনিরুল ইসলামকে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার সময় ক্যামেরাবন্দি করা হয়।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ওই এলাকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পলাতক বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বসবাস করছেন। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারত সরকারের উচিত হবে অনতিবিলম্বে এদের খুঁজে বের করে বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা। এ বিষয়ে ভারতীয় হাই কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

সাক্ষাৎকারে ‘পালাব না’ বলেও বর্তমানে ভারতে অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে হোয়াটসঅ্যাপে মনিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, আপনাকে তো সেদিন (১৮ সেপ্টেম্বর) ঠিকই বলেছি, মিথ্যা তো বলি নাই। আপনাকে যেদিন সাক্ষাৎকার দিয়েছিলাম, তখন সেটাই সত্য ছিল। ঢাকাতেই ছিলাম, আত্মগোপনে ছিলাম।

কোটা সংস্কারে পরিচালিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৫ কোটি টাকা আনার অভিযোগ ওঠার পর ফোনে সমালোচিত এ কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেয় ঢাকা পোস্ট। সেসময় তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি পালিয়ে যাইনি। পালাবও না। আমি দেশেই ছিলাম, দেশেই আছি। ভবিষ্যতে দেশেই থাকব। তবে দীর্ঘদিন জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত ছিলাম। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর অনেক সন্ত্রাসী, জঙ্গি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। যাদের আমি নিজের হাতে গ্রেপ্তার করেছিলাম। তারা আমাকে এখন হুমকি দিচ্ছে। আমি তো এখন পুলিশের কেউ নই। আমাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। আমি এখন স্বাধীন। তাই কোথায় আছি সেটা তো ব্যক্তিগত। তবে দেশেই আছি। নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারি বাসায় ফিরিনি।

তবে ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ২৫ কোটি টাকা আনার বিষয়টি অস্বীকার করেন এ কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেছিলেন, টাকা আনার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এসবি তো অপারেশনাল ফোর্স না। অস্ত্র নিয়ে এই আন্দোলনে এসবির কেউ ডিউটি করেও নাই। দ্বিতীয়ত এসবি হলো ইনটেলিজেন্স ফোর্স, ফাইটিং ফোর্স না। সুতরাং এমন টাকা আনার প্রশ্নই ওঠে না। পুরো বিষয়টি ভুয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *