রেলপথ অবরোধ করেছেন রাবি শিক্ষার্থীরা

Slider রাজশাহী


কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে রেললাইন অবরোধ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১২ জুলাই) বিকেল ৫টার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন তারা। এতে রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

এর আগে বিভিন্ন হল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ও হল প্রদক্ষিণ করে স্টেশন বাজারের রেলপথে জড়ো হন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাইয়ের রক্ত কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার বোনের রক্ত কেন? চট্টগ্রাম-কুমিল্লায় রক্ত কেন? প্রশাসন জবাব চাই, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না,’ ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে,’ ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

এছাড়াও ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলকথা, সুযোগের সমতা’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বাজার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, আমাদের ভাইদের কী দোষ ছিল। আমরা শুধু আমাদের যৌক্তিক অধিকার নিয়ে কথা বলেছিলাম। কিন্তু আজকে পুলিশ আমার ভাইদের শরীর থেকে রক্ত ঝড়িয়েছে। আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা উঠবো না। কোটা সংস্কারের দাবিতে সরকার যে প্রহসন শুরু করেছে তা বন্ধ করে অতিদ্রুত আপিল বিভাগ শিক্ষার্থীদের পক্ষে যৌক্তিক রায় দিতে হবে। আমাদের দাবি আদায় না হলে কোনো শিক্ষার্থী ঘরে ফিরবে না।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের ১ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিটি হলো- সরকারি চাকরিতে সকল পর্যায়ে অযৌক্তিক ও বেষম্যমূলক কোটা বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা, উপজাতি ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ন্যূনতম ৫% কোটা জাতীয় সংসদে বিল পাস করতে হবে। এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা ২, উপজাতি ২ এবং প্রতিবন্ধী কোটা ১টি করে থাকবে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটার সংস্কার ও কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে রেলপথ অবরোধ করেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো শিক্ষার্থী রিডিং রুম বা হলে ফিরে যাব না। আর যদি পুলিশ বা সরকারের কোনো বাহিনী হামলা চালায় তাহলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। আমাদের এ দাবি বেঁচে থাকার দাবি।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার আবদুল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করায় এখন পর্যন্ত দুটি ট্রেন আটকা পড়েছে। গোপালগঞ্জগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ও পাবনাগামী ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি আটকে আছে।

জুবায়ের জিসান/আরএআর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *