ঢাকা: বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু মেঘনা সেতু। ১৯৯১ সালে এই সেতুর উদ্বোধন হয়। তবে অব্যাহতভাবে পিলারের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় বর্তমানে ঝুঁকিতে পড়েছে সেতুটি।
সেতুর ৬নং পিলার পাশ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেখানে বড় ধরনের খাদের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে খাদের আকৃতি।
সেতুর পিলারের কাছে ক্ষতের কথা উল্লেখ করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) সূত্র জানায়, সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলের কারণেই ঝুঁকিতে পড়েছে সেতুটি। নৌযান চলাচলের কারণে পিলারের নিকট সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন ক্ষত।
সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের সার্ভেতে দেখা গেছে, ৬নং পিলারের ক্ষতের(scour) পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
মেঘনা নদীর তলদেশ সার্ভে করে দেখা গেছে পিলারটির পাইলিং মারাত্মক ঝুঁকিতে। এই পরিস্থিতিতে ৬নং পিলার ঝুঁকিমুক্ত করতে মেঘনা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া, মেইনট্যানেন্স ম্যানুয়াল অনুসারে সেতু দু’টির রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।
সওজ সূত্র জানায়, সেতু ঝুঁকিমুক্ত করতে জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। ‘মেঘনা সেতুর স্কাউয়ার প্রটেকশন এবং মেঘনা সেতু ও গোমতী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ’ প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৪২ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় নদীর স্কাউয়ার প্রতিরক্ষা (বালুভর্তি জিওব্যাগ এবং বালু ভর্তি জুট ব্যাগ), হিঞ্জ বিয়ারিং রক্ষণাবেক্ষণ, এক্সপানশন জয়েন্ট রক্ষণাবেক্ষণ, রেলিং এবং কার্ব রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এছাড়া প্রিমিক্স ওভারলে, রোড মার্কিং এবং স্ট্রিট লাইটিংয়েরও ব্যবস্থা করা হবে।
সওজ-এর প্রধান প্রকৌশলী এম ফিরোজ ইকবাল বলেন, সেতু নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত করতে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। মেঘনা সেতুর ৬নং পিলার ঝুঁকিতে রয়েছে।এর চারপাশ থেকে মাটি সরে গেছে। প্রকল্পের আওতায় স্কাউয়ার প্রটেকশন কাজের মাধ্যমে মেঘনা নদীর ৬নং পিলারকে ঝুঁকিমুক্ত করা হবে।অন্যদিকে মেঘনা এবং গোমতী সেতুর হিঞ্জ বিয়ারিং ও এক্সপানশন জয়েন্টগুলোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে সেতু দু‘টিকে যে কোনো রকমের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করা হবে।’
উল্লেখ্য, এ সেতুর দৈর্ঘ্য ১৪১০ মিটার এবং প্রস্থ ৯ দশমিক ২ মিটার। ১৭ পিলার বিশিষ্ট সেতুটি দুই লেন বিশিষ্ট। এই সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০০০ গাড়ি চলাচল করে। চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও নোয়াখালীসহ ওই অঞ্চলের অন্যান্য জেলার মানুষের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক পথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সেতুটি।