নারায়ণগঞ্জে সাত খুন সিআইডিকে তদন্ত থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন খারিজ

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ সারাবিশ্ব

31293_nur

জেলা সংবাদদাতা
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
নারায়ণগঞ্জ:  সাতজনকে অপহরণ ও খুনের মামলার তদন্ত কার্যক্রম থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) বাদ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন খারিজ করেছেন হাইকোর্ট।

আবেদন যথাযথ না হওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তা খারিজ করেন।

আদেশে আদালত বলেছেন, ‘ইনভেস্টিগেশনের জায়গায় ইনকোয়ারি হবে।’

এর ফলে সিআইডি ওই মামলার অনুসন্ধান করতে পারবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আজ সকালে ওই আবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। এ ছাড়া আদালতের নির্দেশ অনুসারে বিবাদীদের কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন তিনি। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আদালত আদেশ দেন।

নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কার্যক্রম থেকে সিআইডিকে বাদ দিতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদেশের এ-সংক্রান্ত অংশটুকু সংশোধন চেয়ে আবেদনটি করা হয়।

হাইকোর্টের নির্দেশে গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পাশাপাশি সিআইডি মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বিবাদীদের কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। শুনানির শুরুতে আদালতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ওই বিষয়টি উপস্থাপন করেন। পরে আদালত বৃহস্পতিবার আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশ অনুসারে ওই ঘটনা তদন্তে গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ছাড়াও র্যাব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে কার্যক্রমের অগ্রগতি প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে পৌঁছে। গতকাল সিআইডি কার্যক্রমের অগ্রগতি জানিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। এ বিষয়ে গতকাল শুনানির দিন ধার্য ছিল।

শুনানির জন্য বিষয়টি উত্থাপিত হলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আদেশের একটি অংশ (সিআইডির তদন্ত) স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করেছিল। চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। নিয়মিত বেঞ্চ এ ব্যাপারে হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদন করার পরামর্শ দেন। এ অনুযায়ী আদালতে আবেদন করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্য পদ্ধতি অনুযায়ী একই মামলায় দুটি তদন্ত সংস্থা একসঙ্গে তদন্ত করতে পারে না।

এ সময় আদালত বলেন, এ ব্যাপারে আমরা আগেও কথা বলেছি। আমরা এমনভাবে শব্দ চয়ন করেছি যেন তদন্তে কোনো ধরনের জটিলতা না হয়। একটির সঙ্গে অন্যটি সাংঘর্ষিক যাতে না হয়, সে জন্য আমরা আদেশ দিয়েছি। প্রত্যেকেই স্বতন্ত্রভাবে তদন্ত করবে। এ সময় আদালত চারটি অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে বলেন।

বেলা তিনটা ৩৫ মিনিটের দিকে মাহবুবে আলম বলেন, আদালতের কার্য সময় শেষ হয়ে গেছে। এ পর্যায়ে আদালত চারটি প্রতিবেদন কাল (বৃহস্পতিবার) উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।

নারায়ণগঞ্জে সাতজনকে অপহরণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে ৫ মে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দেন। এতে সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যদের কোনো গাফিলতি আছে কি না, এটিসহ পুরো ঘটনা তদন্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিভাগীয় তদন্ত করতে র্যাবের মহাপরিচালক এবং গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) পাশাপাশি সিআইডিকে (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) মামলা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহূত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *