হাতপাখার আড়ালে বিএনপি-জামায়াত!

Slider রাজশাহী

আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতকে পাশে পাওয়ার আশা করছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি মনে করছে, নৌকাকে হারাতে আওয়ামী লীগবিরোধী সব ভোটই তাদের হাতপাখা প্রতীকে পড়বে। যদিও বিএনপি-জামায়াতের নেতারা এই গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ভোট নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। ২০১৮ সালের রাসিক নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী ছিলেন শফিকুল ইসলাম। দলীয় হাতপাখা প্রতীকে তিনি পেয়েছিলেন তিন হাজার ২৩ ভোট।

ওই নির্বাচনে বিএনপির মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৭৭ হাজার ৭০০ ভোট। আর আওয়ামী লীগ প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৬৫ হাজার ৯৬ ভোট।

আওয়ামী লীগ এবারও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে নৌকার প্রার্থী করেছে। বিএনপি ভোটে না থাকার ঘোষণা দিয়েছে। এ অবস্থায় নৌকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে হাতপাখা।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। নতুন উদ্যমে ভোটের মাঠে নেমেছে। সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত করতে নিয়মিতই সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে; নেতাকর্মীদের চাঙা করছে। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো রাজশাহীতেও চমক দেখাতে চায় দলটি। তাই মেয়র প্রার্থীদের নতুন মুখ এনেছে তারা। এবার প্রার্থী হয়েছেন দলের রাজশাহী মহানগরীর সিনিয়র সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী।

গত সোমবার নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঈদ পুনর্মিলনীর নামে নির্বাচনী সমাবেশ করে। সমাবেশে সিটি নির্বাচন নিয়েই মূলত বক্তব্য দেন নেতারা।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন। অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যের প্রশ্নে আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘সব জায়গায় ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক। তারা সবাই শুভ কামনা জানিয়েছে। পাঁচ সিটিতেই তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। এর বাইরেও কিছু দল আছে, যারা আমাদের সমমনা, তাদের সঙ্গেও আমাদের কথাবার্তা হয়েছে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি তারিফ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে জোট করিনি। তবে আশা করছি, তাদের ভোট আমরা পাব।’

মেয়র প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকী জানান, তার দল কারও সঙ্গে জোটে নেই। তারপরও ইসলামী দলগুলো তাদের সমর্থন করবে। ইসলামী দলের বাইরেও যারা আছে, তারাও সঙ্গে থাকবে।’ হাতপাখার পাশে বিএনপি-জামায়াত থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এভাবে বলি না। সবাই আমাদের সঙ্গে আছে- আমরা এটাই জানি।’

ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে থাকার বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা বলেন, ‘তারা নিজেদের মতো করে যা খুশি বলতেই পারেন। কিন্তু আমরা ভোটে নেই, কারও সঙ্গেও নেই।’

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামের কোনো নেতা রাসিক নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন না। তারা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে কিনা জানতে চাইলে জামায়াতের রাজশাহী মহানগরের শূরা পরিষদ সদস্য মাজেদুর রহমান বলেন, ‘একেবারেই না। তারা একটা আলাদা দল, তারা নিজেদের মতো করে চলে। আমরা চলি আমাদের মতো। রাজনৈতিক দল হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের কোনো কথা নেই, কোনো ধরনের আলোচনা নেই। ওদের তো গ্রহণযোগ্যতাই নেই। ভোট নেই।’

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, ‘নির্বাচনী মাঠে আমরা কাউকেই ছোট করে দেখি না। ভোটযুদ্ধে সবাইকে স্বাগত জানাই আমরা। তবে বিএনপি সামনে ভোটে আসতে ভয় পায়। এ জন্য তারা চোরা সমর্থন দিতে পারে কাউকে। কিন্তু ভোটাররা এখন সচেতন। তারা উন্নয়নের পক্ষে আবারও রায় দেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *