শেখ হাসিনার পতনের লাল বাতি জ্বলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সাবেক মন্ত্রী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সাড়ে চার মাসের বেশি কারাগারে থাকার পর কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জেলখানাতে নির্যাতনের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বিরোধীদলের নেতাদের সেলে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। সেখানে যদি কেউ আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসত তার স্থান হতো কাশিমপুর কারাগারে। যেমনই স্থান হয়েছে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপুসহ অনেক নেতার। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে এবং প্রমোশনের আশায় অতিলোভী কারা কর্মকর্তারা এগুলো করছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজিজুল বারী হেলাল, সাইফুল ইসলাম নীরব, আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ-নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সরকার মনে করছে তাদের শেষ রক্ষা হবে, কিন্তু এবার আর তা হবে না। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের সব লাল বাতি জ্বলে গেছে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশকে জাতীয়ভাবে পঙ্গু করার জন্য, বিরোধীদল শূন্য করার জন্য চক্রান্ত চলছে। প্রধানমন্ত্রী মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে ডিজিটাল আইনসহ বিভিন্ন কালাকানুন করে বাগ্স্বাধীনতা আটক করে রেখেছে। আজকে ফেসবুকে কেউ সত্য লিখলে, শেয়ার করলে শুধু তাকেই নয়, বাবা-মাসহ পরিবার পরিজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জামিন হয় না।’
রিজভী বলেন, ‘এই পৃথিবীর বিভিন্ন কুখ্যাত স্বৈরশাসকের নমুনা আমরা আওয়ামী সরকারের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি। আজকে এদের অত্যাচারের নমুনা বিট্রিশ শাসনামল, পাকিস্তান শাসনামল, হিটলার ও চেঙ্গিস খানকেও হার মানিয়েছে। এ সরকারের বর্বরতার ইতিহাসও একটি অধ্যায় হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনি দেশের জন্য কিছু আনতে পারেননি, তিস্তার পানি আনতে পারেননি। আপনি শুধু নিঃস্বার্থে সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে গেছেন।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিদেশিদের সঙ্গে দেন-দরবার করতে গেছেন। তিনি দেশের সম্পদ বিক্রি করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চান? দেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। আসলে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) গ্যারান্টি চান। আবার দিনের ভোট রাতে করার নিশ্চয়তা চান। কারণ, আপনি জানেন- জনগণ আপনাকে ভোট দেবে না। শুধু ক্ষমতার স্বার্থে দেশ বিকিয়ে দিলে জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবে না।’
স্মরণসভার আয়োজন করে অধ্যাপক এম এ মান্নান স্মৃতি পরিষদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব শওকত হোসেন সরকারের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, কেন্দ্রীয় নেতা ওমর ফারুক সাফিন, একরামুজ্জামান বিপ্লব, শাহ রিয়াজুল হান্নান, এম মঞ্জুরুল করিম রনি, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা রাশেদুল হক প্রমুখ।