নিন্মমানের কাজ আর কাগজপত্র জমা না দিয়েই উপজেলা এলজিইডি অফিসে ঠিকাদারি কাজের বিল চেয়েছিলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সেই আলোচিত নৌকামার্কার চেয়ারম্যান মাসুদ রানা। কিন্তু বিল দিতে রাজি হননি বগুড়ার ধুনট উপজেলার উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ রিজন। এতেই বাধে বিপত্তি। চেয়ারম্যানের হাতে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত হন ওই কর্মকর্তা।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ধুনট উপজেলা ক্যাম্পাসের এলজিইডির দপ্তরে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশি দাতা সংস্থার অর্থায়নে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ধুনট সদর ইউনিয়নে চৈতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ক্ষমতার দাপটে চেয়ারম্যান নিজেই কাজটি করছে। গতকাল ঠিকাদারের প্রতিনিধি হিসেবে চেয়ারম্যান আমাদের অফিসে এসে বিল চায়। কিন্তু কাগজ ঠিক না থাকায় আমি বিল দিতে না চাইলে চেয়ারম্যান অশ্রাব্য ভাষায় সবাইকে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে তিনি আমার ওপর মারমুখী আচরণ করেন।’
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে এলজিইডির কর্মকর্তার সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়েছে। তবে নেতারা বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছে।’
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম আমাদের সময়কে বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ছিলাম। মোবাইলে উপজেলা প্রকৌশলী বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাধারণ শাখার সহকারী কমিশনার এসএম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত ১৯৭১ সালে বেতন ও অস্ত্রপ্রাপ্ত ধুনট উপজেলার রাজাকারদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা গেজেটভুক্ত করা হয়।
ওই রাজাকারের তালিকায় ৪৮ নম্বরে রয়েছেন ধুনট সদর ইউনিয়নের পাকুড়িহাটা গ্রামের মৃত কোরবান আলী ছেলে ইদ্রিস আলী। তার বিরুদ্ধে বগুড়ার ধুনট উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামে হত্যাকাণ্ড এবং বিলচাপড়ী, কালেরপাড়া, আনারপুর কচুগাড়ী, মালোপাড়া গ্রামে বিভিন্ন বাড়িঘর পোড়ানো ও লুটপাট এবং থানায় গণ হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
সেই রাজাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে ধুনট সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পাওয়ায় সারা দেশে ব্যাপক আলোচিত হয়েছিলেন চেয়ারম্যান মাসুদ রানা। এর আগের কমিটিতে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই চেয়াম্যান মাসুদ রানা।