মুশফিক ঝড়ের পর বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত ম্যাচ

Slider খেলা

বৃষ্টির কারণে শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্ত হলো বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ। স্থানীয় সময় রাত ৮-৩২ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। যদিও কাট-অফ টাইম ছিল ৯.৩৩। নিয়ম অনুযায়ী, ন্যুনতম ২০ ওভারের জন্য এই সময় বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এই সময়ের ঘণ্টাখানেক আগেও বৃষ্টির দাপট ছিল। ফলে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলাটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। আগামী ২৩ মার্চ একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ৩৪৯ রান করে। পরে ম্যাচের ইনিংস বিরতির সময় বৃষ্টি শুরু হয়। সেই বৃষ্টিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচ পরিত্যক্ত করে দেয়। ম্যাচের ফল না হওয়ায় বাংলাদেশের অনেক কীর্তিই হয়তো চূড়ান্ত সফলতার মুখ দেখলো না। টাইগাররা এ ম্যাচ জিতলে সিরিজ ঘরে তুলতো।

এর আগে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে বেশ কয়েকটি রেকর্ডের মালিক হয়। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে ৩৩৮ করে টাইগাররা। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের রেকর্ডই ভাঙে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৪৯ রান করে স্বাগতিকরা। মুশফিক ৬০ বলে শতকের দেখা পান। যা বাংলাদেশি কোনো ব্যাটার হিসেবে দ্রুততম। আগের সেরাটি ছিল সাকিব আল হাসানের। ২০০৯ সালে সাকিব জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন।

আজ সোমবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিকেল ৩টায় খেলতে নামে দুদল। যেখানে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে টাইগাররা।

বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুটা ভালো করে। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে মার্ক অ্যাডাইরের বলে তামিমের ব্যাটে আসে প্রথম চার। তবে দশম ওভারে স্কয়ার লেগে খেলেছিলেন লিটন দাস। রান নেবেন কি না, সেটি নিশ্চিত ছিলেন না লিটন বা তামিমের কেউই। একটু দেরি করে দৌড়ানো শুরু করেন দুজন, তবে বিপজ্জনক প্রান্তে ছিলেন তামিম। মার্ক অ্যাডায়ারের থ্রো সরাসরি ভাঙে স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্প। দুই ওভারে টানা দুই চার মেরে ছন্দে আসার ইঙ্গিত দেওয়া তামিম ৩১ বলে ২৩ রান করে রানআউট হন। আজ ছিল অধিনায়কের জন্মদিন। যদিও এমন দিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান লিটন দাস। ৫৪ বলে তিনি ফিফটি করেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তিনি নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৯৬ বলে ১০১ রান তোলেন। এছাড়া ওয়ানডের ২ হাজার রানও পূর্ণ করেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ৭০ রানে কার্টিস ক্যাম্ফারের শিকার হন তিনি। ৭১ বলে ৩টি চার ও সমান ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান।

শান্ত এরপর ফিফটি তুলে নেন। ৫৯ বলে এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি। কিন্তু ২ ওভারের ব্যবধানে সাকিব আল হাসান ও শান্তকে হারায় বাংলাদেশ। দুজনকেই তুলে নেন গ্রাহম হিউম। ১৯ বলে ১৭ রান করে টেক্টরকে ক্যাচ দেন সাকিব। আর ৭৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৩ করে উইকেটরক্ষক লর্কান টাকারের ক্যাচে পরিণত হন শান্ত।

মুশফিকুর রহিমের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরির পর দলীয় ৩০০ পার করেছে বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ৭৮ বলে ১২৮ রানের জুটি গড়েন তিনি। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৭ হাজার রানের মাইলফলক গড়েন মুশফিক। হৃদয় অ্যাডায়ারের বলে দারুণ ইনিংস খেলে ফিরলেও এক রানের জন্য ফিফটি করতে পারেননি। ৩৪ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৯ করে বিদায় নেন অভিষেকে ম্যাচ সেরা হওয়া এই ব্যাটার।

শেষ দিকে ইয়াসির আলী হিউমের তৃতীয় শিকার হয়ে ব্যক্তিগত ৭ রানে ফেরেন। তবে অবিচল থাকেন ‍মুশফিক। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে নবম সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ১৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬০ বলে ঠিক ১০০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

আইরিশ বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান গ্রাহাম হিউম। একটি করে উইকেট দখল করেন অ্যাডায়ার ও ক্যাম্ফার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *