বোনের সম্পত্তি মৌখিক সম্মতিতে দখল করলে সাজা পাবে ভাই

Slider জাতীয়


ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, নতুন ভূমি অপরাধ আইনে শুধু মৌখিক সম্মতিতে বোনের সম্পত্তি দখল করলে ভাইয়ের জন্য সাজার বিধান রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে নীতি সংলাপ ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান। এ সভার আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বক্তব্য রাখেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইখতেখারুজ্জামান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামসহ আরও অনেকে।

এসময় বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা, নতুন ভূমি আইন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটালাইজেশন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। উত্তরাধিকার আইন নারীদের জন্য বৈষম্যমূলক ও নারীরা নানা কায়দায় পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয় বলে অভিযোগ জানান নারী প্রতিনিধিরা।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ‘উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে নারীদের বঞ্চিত করা হয়। ভাইদের টেনডেনসি আছে বোনদের বঞ্চিত করে জমি নিয়ে নেওয়া। ইটস অ্যা ক্রাইম। এটা যদি কেউ বলে আমার বোন মৌখিকভাবে আমাকে দিয়েছে, তাও মাফ নাই। ওই অপরাধে তাকে জেলে ঢুকতে হবে, সাজা তাকে পেতে হবে। এটা ভূমি অপরাধ আইনে আসছে।’

রিসার্স ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের প্রতিনিধি সুরাইয়া বেগম বলেন, উত্তরাধিকার আইনে অনেক বৈষম্য আছে। তারপরও যতটুকু প্রাপ্য নারী সেটা পায় না।

রিভার ও ডেল্টা রিসার্স সেন্টারের প্রতিনিধি আজাদ বলেন, নদীর পাড়ের জমি দখল করে শিল্পপতিরা শিল্প করেন। ব্যাংকে সেটা মর্টগেজ হয়, নদীর জমি কীভাবে মর্টগেজ হয়। সেখানে আমাদের ম্যানেজমেন্ট কী হবে, দখল কীভাবে দূর হবে?

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, নদীভাঙনের শিকার মানুষের জন্য নতুন আইনে বিধান রাখা হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিকদের জমির ব্যাপারে ও সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নদীভাঙন সংক্রান্ত ভূমি ব্যবহার ও মালিকানা আইনে সিকস্তি, পয়স্তিরে একটা চ্যাপ্টার আছে। কিছু জিনিস আইনে আসবে, পুরো প্রসেসটা আমরা বিধিতে নিয়ে আসবো। ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিকদের ৯৭ ধারার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। ১৬টা জেলার ব্যাপারে একটা সার্কুলার দেব।

ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে আসা চিঠিতে বলা হয়েছে তিন ফসলি জমির ক্ষেত্রে যাতে কোনো আপস না করা হয়। হ্যাঁ, সরকারি কোনো কাজে প্রাইভেট সেক্টরে আমরা এনকারেজ করবো অনলি ম্যাকানাইজ ফার্মিংয়ের ক্ষেত্রে। কারণ আমাদের জমি কমে আসছে। আমরা ভালো সিড নিয়ে এসেছি। কৃষিতে তো একটা বিপ্লব হয়ে গেছে এই সরকারের আমলে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইখতেখারুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল ডিভাইসের কারণে ভূমি সংক্রান্ত কাজ ডিজিটাল হলেও জনগণ এর সুফল পায় না। জনগণকে বঞ্চিত করার জন্য একটি শ্রেণি গড়ে ওঠে। প্রায় অর্ধেকের বেশি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কারণে সেবাগ্রহীতারা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও মনে করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *