গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে মা ও শিশু সন্তান হত্যার ঘটনায় জড়িত রহমত উল্লাহ (২৯) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বুধবার দিবাগত ভোর রাতে যশোরের সিমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি রহমত উল্লাহ গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার কুশদী গ্রামের গিয়াসউদ্দিনের ছেলে।
শুক্রবার দুপুরে হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমির হোসেন।
তিনি বলেন, রহমত উল্লাহ পেশায় একজন রং মিস্ত্রি।সে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর তিন চার মাস আগে শ্রীপুরের কেওয়া পশ্চিম খন্ড এলাকায় ভাড়া থেকে কাজের সন্ধান করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় রুবিনার সাথে পরিচয় হয় রহমতুল্লাহর।এবং রুবিনা তার টিনসেড হাফবিল্ডিং বাড়ীতে রংয়ের কাজ করায়। রুবিনার বাড়িতে রংয়ের কাজ করার সুবাধে রুবিনার সাথে তার ভাল সম্পর্ক গড়িয়া উঠে।
রুবিনা এবং তার স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভাল না থাকায় রুবিনার স্বামী অন্যাত্র থাকিত। রহমত উল্লাহ রুবিনার বাসার বাজার সহ সমস্ত কাজ করে দিত।
যার ফলে প্রতিনিয়ত রুবিনার বাসায় যাতায়াত ছিল রহমত উল্লাহর। এক পর্যায়ে রুবিনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেয় রহমত উল্লাহ।এতে রুবিনা রাজী হয়নি। পরবর্তীতে ঘটনার ৭ দিন পূর্বে ২৮ ডিসেম্বর ২২ তারিখে রুবিনা তার শারীরিক অসুস্থতার কথা জানায় এবং ওষুধের দোকান হইতে ওষুধ নিয়া আসার জন্য বলে।পরে ওষুধের সাথে ঘুমের ওষুধ নিয়ে রুবিনাকে দেয় এবং খাওয়ার জন্য বলে।
পরে রাত ৮ টার দিকে রুবিনার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করার জন্য বাড়িতে গেলে রুবিনাকে অর্ধচেতন অবস্থায় দেখতে পায়। তখন রুবিনার ছেলে জিহাদ মোবাইল ফোনে গেমস খেলতেছিল। জিহাদ জেগে থাকায় জিহাদের ঘুমের জন্য অপেক্ষা করে।
পরে জিহাদ ঘুমিয়ে পড়িলে রুবিনার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চেষ্টা করে
এই সময় রুবিনা অর্ধচেতন অবস্থায় বাধা দেয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে শিশু জিহাদ জেগে ওঠে চিৎকার দেয়। জিহাদ যাতে চিৎকার করিতে না পরে তাই জিহাদের গলা চেপে ধরে কিছুক্ষন পরে
জিহাদ কোন শব্দ না করলে জিহাদ মারা গেছে বুঝিতে পেরে রুবিনাকেও গলা চেপে হত্যা করে।
এসময় রুবিনার ব্যবহৃত ২ টি মোবাইল ফোন ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা নগদ ২৫০০ টাকা পায়ে থাকা একজোড়া রুপার নুপুর খুলে নিয়ে ঘরের দরজা ও গেইট বাহির থেকে তালা দিয়ে রহমত উল্লাহ পালিয়ে যায়।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক এসআই আমজাদ হোসেন ও উপপরিদর্শক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী বলেন,হত্যা কান্ডের পর থেকে আসামী পলাতক ছিল। পরবর্তী সময়ে মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার অবস্থান নিশ্চিত করে ভারতের সিমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শ্রীপুর মডেল থানার পরিদর্শক ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, মা ছেলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নিজেই তার হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের শ্রীপুরেে নিখোঁজের তিনদিন পর (৭জানুয়ারি) শনিবার বিকালে পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখন্ড গ্রামের এসিআই ফেক্টরীর পাশে নিহতের নিজ বসত ঘর থেকে মা ও শিশু সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নারী রুবিনা (২২) উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খন্ড এলাকার সিজার মিয়া সিরুর মেয়ে ও মো. ঝুমন মিয়ার স্ত্রী। তিনি বাবার বাড়িতে জমি কিনে বাড়ি করে সেখানেই থাকতেন। অপর নিহত ৬ বছর বয়সী শিশু নিহতের ছেলে জিয়াদ।