গাজীপুরে গাজরীকাঠ পাচার ও কাটার উৎসব! বাড়িঘর নির্মানের হিড়িক

Slider ফুলজান বিবির বাংলা
Exif_JPEG_420

গাজীপুর: যারা বন পাহারা দিবে তারাই বন ধ্বংস করছে। জঙ্গলের ভেতরে বন অফিসে লোকবলের সংকট থাকলেও মহাসড়ক সংলগ্ন বন অফিসে লোকবলের উপচে পড়া ভীড়। এক জনকে দুটি দায়িত্বও দেয়া হয়েছে মহাসড়ক সংলগ্ন বন অফিসে। গজারী বনের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করলে দেখা যায় প্রায়ই কেটে ফেলে রাখা গজারী কাঠের স্তুপ। পাতা দিয়ে লুকানো জায়গায় বড় গাছের শিকড়। এসব বিষয়ে বন অফিস গুলো বলছে গাছ কাটার খবর তাদের কাছে নেই।

সরেজমিন ভাওয়াল গড়ের বিভিন্ন স্পট ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

খোজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরে একটি চেক পোষ্ট রয়েছে। এই অফিসে স্টাফের সংখ্যা অনেক। প্রধান কর্তাব্যক্তি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হওয়ার পাশাপাশি বন মামলা পরিচালকও বটে। দুটি দায়িত্ব পালন করলেও আদালতে আসেন কম। চেকপোষ্ট এলাকায় বেশী সময় অবস্থান করেন। এই অফিসে চাকুরী ছাড়া রয়েছে ফ্রিম্যান পদের লোক। এই সকল ফ্রিম্যানের কাজ হল চোরাই কাঠ পাচারের ঠিকাদারী করা। এরা বন অফিসের সঙ্গে চোরাই কাঠপাচারকারীদের সংযোগ স্থাপন করে দেয়। কালিয়াকৈর চেকপোষ্টে ফ্রিম্যান কবির হোসেন ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সালনা চেকপোষ্টের ফ্রিম্যান হান্নান মিয়া। দুই মহাসড়কের দুই ফ্রিম্যান বন ধ্বংসের জন্য কাজ করছেন। সবাই এদের মনে করেন বনের স্টাফ। আসলে কোন স্টাফই না এরা। তারা শুধু কাঠপাচারের রুটটি নিরাপদ করে দেয়।

সম্প্রতি ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশে কালিয়াকৈর এলাকায় ৯২টি গজারী কাঠ জব্দ হয়। সংশ্লিষ্ট চেকপোষ্ট অতিক্রম করে অসংখ্য কাঠ পাচারের পর কয়েকটি কাঠ জব্দ হয়েছে। এই কাজে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করেছে ভাওয়াল গড় বাঁচাও আন্দোলন নামে বন রক্ষার একটি সংগঠন।

গোপন সূত্র বলছে, জব্দ হওয়া ৯২টি কাঠ জনৈক টাঙ্গাইলের চোরাকারবারী তোফায়েল ও সোহাগ মিয়ার। নাম জেনেও বন বিভাগ তাদের নামে কোন মামলা করেনি। কোন কাঠ জব্দ হলে বন বিভাগ যে মামলা করে তাতে আসামীর নাম থাকে খুব কম। অবৈধ অর্থৈর বিনিময়ে নাম কাটা পড়ে যায়। আর কাঠগুলোকে পরিত্যক্ত দেখোনো হয়।

Exif_JPEG_420

সরেজিমন সোনাতলা বন অফিসে গিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে কোন মামলা বা কাঠ জব্দ হয়নি। ফরেষ্ট অফিসারের সুন্দর বক্তব্যের পর সোনাতলা এলাকার কাথাচোরা নাম স্থানে গিয়ে দেখা যায় ৪/৫ শ গজারী কাঠ কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। বিষয়টি ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জানালে তিনি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিলে সোনাতলা বন কর্মকর্তা জানান, এ গুলো জোতের কাঠ। অথচ বনের ভেতর জোত থাকলে সীমানা নির্ধারণ ও অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যাবে না মর্মে নিয়ম থাকলেও এ ক্ষেত্রে নিয়ম কাজ করেনি।
Exif_JPEG_420

এ ছাড়া গাজীপুর জেলার এমন একটি বিট অফিস নাই যেখানে প্রতিদিন বনের জায়গায় ঘরবাড়ি নির্মান হচ্ছে না। বন অফিসকে জানালে কাজ বন্ধ করে। কিছু দিন পর আবার ঘর উঠে যায়। এসবের পাশাপাশি বনের জায়গা থেকে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কাটার দৃশ্য সব সময়ই চোখে পড়ে।

এসব বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেছেন, অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *