সার্ভে চলছে, আমলনামা দেখে মনোনয়ন

Slider রাজনীতি

জাতীয় সংসদের উপনেতা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি জাতীয় সংসদের স্পিকারকে জানালে তিনি তাকে উপনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন। পরে সংসদ সচিবালয়ের সচিব এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবেন। সংসদ উপনেতা মন্ত্রীর মর্যাদা পেয়ে থাকেন।

জানা গেছে, সভায় সংসদের উপনেতা হিসেবে বেগম মতিয়া চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওই প্রস্তাবে সমর্থন জানান সংসদীয় দলের সম্পাদক ও চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী।

দলের সভাকক্ষে সংসদীয় দলের সভা শেষে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, মতিয়া চৌধুরীকে জাতীয় সংসদের উপনেতা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি উপনেতা হচ্ছেন, এটাই ফাইনাল। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী গত ১১ সেপ্টেম্বর মারা গেলে উপনেতার পদটি শূন্য হয়।

এদিকে সংসদীয় দলের সভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় নিরপেক্ষ এবং প্রতিযোগিতামূলক হবে বলে দলীয় সদস্যদের জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে বিজয়ের জন্য দলের সংসদ সদস্যদের এখন থেকেই মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সভায় অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের কয়েকজন সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

সভায় শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং প্রতিযোগিতামূলক হবে। নির্বাচনে বিজয়ের জন্য এখন থেকেই ভালোভাবে কাজ করতে হবে। বিজয়ের জন্য সংসদ সদস্যদের সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় মানুষের কাছে যেতে হবে। জনগণের কাছে গিয়ে আমাদের এ তিন মেয়াদে সরকার যেসব উন্নয়ন কাজ করেছে সেগুলো তুল ধরতে হবে।

সূত্র আরও জানায়, সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের সংসদ সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সংসদ সদস্যদের সবার তথ্যই আমার কাছে আছে। নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার সময় এ বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। সার্ভে হচ্ছে, সার্ভে রিপোর্ট বিবেচনায় নিয়ে, আমলনামা দেখে দলের মনোনয়ন দেওয়া হবে। জনগণ থেকে যারা বিচ্ছিন্ন, এলাকায় যায় না, মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে না, মনোনয়নের ক্ষেত্রে তাদের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যারা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে দলের বিরুদ্ধে কাজ করেছে, তাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

প্রধানমন্ত্রী সরকারের সফলতা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের পাশাপাশি বিরোধী দল বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মগুলোও মানুষের কাছে তুলে ধরার নির্দেশ দেন। অতীতে তারা ক্ষমতায় থেকে যে দুনীতি করেছে, লুটপাট, সন্ত্রাস, হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সেগুলো মানুষকে বলতে হবে। পাশপাশি বিরোধী দলে গিয়ে আন্দোলনের নামে যে আগুন সন্ত্রাস করেছে, মানুষ খুন করেছে, জনগণের সম্পদক নষ্ট করেছে এগুলোও মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে দলের এমপিরা প্রধানমন্ত্রীকে জেলা সফরের জন্য অনুরোধ করেন। জেলা সফরে গেলে সেখানকার অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো কেটে যাবে। তিনি সরাসরি নির্দেশনা দিতে পারবেন। এতে নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল হবেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সফর শুরু করেছেন। আগামীতেও যতদূর সম্ভব সেটা অব্যাহত রাখবেন।

বৈঠকে একাধিক এমপি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে উন্নয়ন কাজের অসমবণ্টনের অভিযোগ তোলেন। তারা বলেন, মন্ত্রীরা অন্য এলাকার দিকে না দেখে কেবল নিজের এলাকার দিকে গুরুত্ব দেন। মন্ত্রণালয়ের কাজ যেন সব এলাকায় সমানভাবে হয়। এ ছাড়া কয়েকজন এমপি নতুন করে বড় কোনো প্রকল্প গ্রহণ না করার পক্ষে অভিমত দিয়ে চলমান প্রকল্পগুলো নির্বাচনের আগে শেষ করার অনুরোধ করেন। পাশাপাশি ভাঙাচুরা সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের অনুরোধ করেন।

বৈঠকে সরকারি দলের এমপিদের মধ্যে শাজাহান খান, আবুল কালাম আজাদ, আ স ম ফিরোজ, সাদেক খান, আতিউর রহমান আতিক, মেহের আফরোজ চুমকি, মেরিনা জাহান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *