বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনের আগে কারাগারে পাঠানোর এখনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন-বাড়াবাড়ি করলে।
শনিবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।
গত ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের জন্য আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, আগামী নির্বাচনের আগে কি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে?
জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয় না খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারায় তার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে শর্ত যুক্তভাবে যে মুক্তি দেয়া হয়েছে, তার পরিবর্তন আনার কোনো চিন্তাভাবনা সরকার করছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে আবারও জেলে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
এ দুটি বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, (খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানেরার) এখনো চিন্তা ভবনা নেই । সেটা কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছেন, বাড়াবাড়ি করলে…।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডিত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ছিলেন। এর মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বিএসএমএমইউ‘তে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের আবেদনে সাজা ৬ মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। এরপর তিনি রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ের নিজের বাসভবন ফিরোজায় যান। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়েছে।
এর মধ্যে খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সবশেষে গত ১৯ সেপ্টম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ মাসের জন্য মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রতিবার একই শর্তে তাকে কারাগারের বাইরে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী, মুক্ত থাকার সময়ে বেগম জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন না।