পেট ফেটে শিশুর জন্ম : ডিসিকে শোকজ

Slider নারী ও শিশু


ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশু ফাতেমার কল্যাণে পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় না করে অ্যাকাউন্ট খুলে পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে জমা রাখার ঘটনায় ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসককে শোকজ করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ সময় আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তবে আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট শিশুটির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দেয় সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড। শিশুটির পরিবারকে গত ৭ আগস্ট এক মাসের মধ্যে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশের পর ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সেই চেক হস্তান্তর করা হয়। তবে শিশুটিকে দেখাশোনার জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তিন মাসের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ কমিটি গঠন করতে বলা হয়।

এদিকে একইসঙ্গে নবজাতকের পরিবারকে আপাতত ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১৫ দিনের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে এ টাকা দিতে বলা হয়। পাশাপাশি শিশু ও তার পরিবারকে কেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত। শিশুটির ১৮ বছর পর্যন্ত যাবতীয় খরচ রাষ্ট্রকে বহনের নির্দেশনা চেয়ে গত ১৮ জুলাই হাইকোর্টে রিট করা হয়। আইনজীবী কানিজ ফাতেমা তুনাজ্জিনার পক্ষে ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন এ রিট করেন।

ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় পেট ফেটে জন্ম নেওয়া জন্ম নেওয়া শিশু ফাতেমার কল্যাণের জন্য হাইকোর্ট পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড পাঁচ লাখ টাকা দেন। ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক সেই টাকা শিশু ফাতেমার কল্যাণে ব্যয়ের ব্যবস্থা না করে শিশুর পরিবারের অন্য সদস্যদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে জমা রেখেছেন। বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেছি। শুনানি শেষে আদালত ময়মনসিংহের ডিসিকে শোকজ করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বিকেলে ত্রিশালের কোর্ট-ভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। এ সময় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে নেওয়ার পর জানা যায়, জীবিত আছে নবজাতকটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *