সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে ৯ নির্দেশনা মাউশির

Slider তথ্যপ্রযুক্তি

দেশের সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সতর্ক করে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

রোববার (২৩ অক্টোবর) মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ও এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ)’ প্রণয়ন করা হয়। ওই নির্দেশিকায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাপ্তরিক ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট তৈরি করা এবং এতে পরিহারযোগ্য বিষয়াদির উল্লেখ রয়েছে। এ নির্দেশনার আলোকে সরকারের সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং এর আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থার কর্মচারীদেরকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হলো—

১. সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

২. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থি কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি পরিপন্থি কোনো তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস/পেশাকে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো পোস্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫. লিঙ্গ বৈষম্য বা এ সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না।

৬. জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে এমন কোনো বিষয় লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা যাবে না।

৭. ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার হতে বিরত থাকতে হবে।

৮. অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য সম্বলিত কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৯. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ‘কন্টেন্ট’ ও ‘ফ্রেন্ড’ সিলেকশনে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক কন্টেন্টের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং সে জন্য প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত যেসব শিক্ষক-কর্মচারী ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ খুলেছেন, সে সব গ্রুপের সব অ্যাডমিনকে গ্রুপে কন্টেন্ট, পোস্ট অনুমোদনের ক্ষেত্রে সরকারি আইন, বিধি প্রতিপালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনাটি মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা নিয়মিত মনিটরিং করবেন। কোনো শিক্ষক-কর্মচারী বা কোনো ব্যক্তি কারও কন্টেন্ট, পোস্টে সংক্ষুব্ধ হলে ওই কন্টেন্ট, পোস্ট আপলোডকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রমাণসহ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করবেন।

মাউশি আরও জানায়, মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে উল্লেখিত কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। অন্যথায়, এ জাতীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *