গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের চট্রগ্রাম বাইপাস সড়কের ধীরাশ্রম রেলক্রসিং-এ প্রতিদিন বিভিন্ন যানবাহন থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা আাদয়ের ঘটনা ঘটছে। ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে মন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
বুধবার(২০ মে) বেলা আড়াইটায় গাজীপুর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক আব্দুল মমিন ওই তথ্য জানান।
এরআগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী জানান, এই ধরণের কোন চাঁদাবাজী হয়ে থাকলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে নির্দেশ
দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের ভগ্নিপতির ও বিএনপি থেকে সদ্য আওয়ামীলীগের যোগদানকারীদের নেতৃত্বে একটি
গ্রুপ প্রতিদিন যানবাহন থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা চাঁদা করে।
সরেজমিন পূবাইল রেলক্রসিং এর গিয়ে দেখা যায়, বাঁশি হুইসেল দিয়ে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় হচ্ছে। প্রতি গাড়ি থেকে ২০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি চাঁদার একটি করে রশিদ দেয়া হয়। রশিদের একটি রেজিষ্টার্ড শ্রমিক সংগঠনের নাম উল্লেখ থাকরেও ওই সংগঠনের কর্ন্বধাররা বলছেন, এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর-১ আসেনর সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্র্রী এড. আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম গ্রামে। সিলেট বাইপাস সড়কের পূবাইল রেলক্রসিং এ একটি সাইনবোর্ড বিহীন অফিস করা হয়েছে। রেলক্রসিং এর দক্ষিন পাশে অবস্থিত মাই ওয়ান ফ্যাক্টরীর সামনে গাড়ি থামিয়ে ওই চাঁদা আদায় করা হয়। বেশ কয়েকজন শ্রমিক শ্রেনীর মানুষ হাতে টিকিট নিয়ে গাড়ি থেকে টিকিট দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদা আদায়ের স্থলের আশপাশে সব সময় অবস্থান করে থাকেন বেশ কিছু যুবক। কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে ওই যুবকেরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। যারা চাঁদা উত্তোলনের কারণ জিজ্ঞাসা করেন তাদের ভয় ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৭ মার্চ থেকে ওই কমিটি গঠন হয়। ২৬ মাচ আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই পয়েন্টে চাঁদা আদায়ের কাজ শুরু হয়। চাঁদা আদায়ের পূর্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। টিকিটের লেখা মতে, গাজীপুর জেলা বাস ট্রাক, পিকআপ, ট্যাংকলরি, কাভার ভ্যান ড্রাইভাস ইউনয়িন রেজি নং ১৭৬১। টিকিটে আরো লেখা হয়েছে, মৃত পঙ্গু বেকার শ্রমিকদের কল্যানার্থে ২০ টাকা। টিকিটে সভাপতি ও সম্পাদকের স্বাক্ষর নেই। শুধু আদায়কারীর লেখার উপরে একটি অস্পষ্ট স্বাক্ষর আছ।
আওয়ামীলীগের দলীয় সূত্র জানায়, চাঁদা আদায়কারী কমিটিরি সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের চাচাত ভাই কাম ভগ্নপতি হাজী আঃ রউফ মোল্লা। সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় ওয়ার্ড এিনপরি সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য আওয়ামীলীগে যোগদানকারী আলমাছ মোল্লা। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছনে মুক্তযুদ্ধ মন্ত্রীর ভাতিজি জামাই বলে পরচিয়দানকারী জনৈক রিয়াজ উদ্দিন রাজু।
এ ছাড়া অন্য যারা এই কমিটির সদস্য তাদের মধ্যে মন্ত্রীর নিকটাত্মীয়, আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কর্মী রয়েছেন।
এ বিষয়ে চাঁদা উত্তোলন কিমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমাছ মোল্লা বলেছেন, আমরা বৈধভাবে চাঁদা আদায় করছি। এ বিষয়ে কাগজপত্রের কপি ডিসি এসপিকে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শ্রমমন্ত্রনালয় থেকে অনুমতি আনা হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
এ সকল বিষয়ে গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তদন্ত করে দেখা হবে। ঘটনাস্থল জয়দেবপুর থানাধীন হওয়ায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।