ডিসি-ইউএনওর লোক’ ছেলের দাপটে বাবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


‘তোরা কেউ কিছু করতে পারবে না। যেখানে অভিযোগ দিবে কাজে আসবে না। কারণ আমার ছেলে ডিসি-ইউএনও’র লোক। তাই তোরা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে কিছুই লাভ নেই। বরং আমি তোদেরকে এলাকাছাড়া করে দিতে পারব।’ এভাবেই ডিসি ও ইউএন’র কথা বলে প্রতিনিয়ত স্থানীয়দের হুমকি দিয়ে আসছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের এক স্কুলশিক্ষক।

বিষয়টি মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

জানা যায়, উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের খালবলা বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) ও খালবলা বাজারের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ দীর্ঘদিন যাবৎ যেকোনো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই প্রতিবেশীদের উপর চড়াও হন। কেউ তার এ আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলে হুমকি-ধমকি দেন তাদের। নিজের ছেলেকে ডিসি-ইউএনও’র লোক পরিচয় দিয়ে ওই হুমকি দেন।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, নূর মোহাম্মদের একমাত্র ছেলে বখাটে জেনিফ বিভিন্ন অজুহাতে ইউএনও ও ডিসির সাথে ছবি তুলে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে নিজেকে তাদের লোক বলে প্রচার করে এলাকাবাসীকে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।

এরই মাঝে প্রতিবেশী বজলুর রহমানের বাড়ি ঘিরে টিনের বেড়া দিয়ে পথ আটকিয়ে দেয়। বাবা-ছেলের এমন কাণ্ডের প্রতিবাদ করলে বজলুর রহমানকে মারতে তেড়ে যায়।

অপরদিকে শিক্ষক নূর মোহাম্মদের বাসা থেকে পয়ঃনিষ্কাশনের পানি বাজারের রাস্তায় আসার প্রতিবাদ করায় স্থানীয় চা-দোকানি মনির হোসেনকে মারধর করতে যায়। ওই বিষয়টি নিয়ে মনির হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পরও অব্যাহত হুমকি দেয়ায় নিরাপত্তহীনতায় ভোগছে মনিরের পরিবার।

বিষয়টি নিয়ে খালবলা বাজারের বাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন, নূর মোহাম্মদ নিজের ছেলেকে ডিসি-ইউএনও’র লোক পরিচয় দিয়ে ওই হুমকি-ধমকি দেয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

স্কুল কমিটির সভাপতি ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম বলেন, নূর মোহাম্মদ ও তার ছেলের জন্য বাজারের ব্যবসায়ীসহ প্রতিবেশীরা অতিষ্ঠ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, নূর মোহাম্মদের ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তাদের কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। অনেক শালিস দরবারের পরেও তারা নিয়ন্ত্রণহীন।

আঠারবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুবের আলম রূপক বলেন, নূর মোহাম্মদ ও তার ছেলের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অসংখ্য অভিযোগের পর তাদের ডেকে সাবধান করলেও তারা তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। পরে বিষয়টি নিয়ে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় উত্থাপন করেছি।

এ ব্যাপারে নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা: হাফিজা জেসমিন বলেন, ইউএনও’র পরিচয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আঠারবাড়ির তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *