শুধু রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল বা পল্লী গীতি নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত হিরো আলমকে তার নামের ‘হিরো’ অংশটিও পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সম্প্রতি ‘হিরো আলম’ নামে পরিচিত আশরাফুল আলমের গাওয়া একটি রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এ নিয়ে কয়েকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে ডাকা হয়। পরে জনমনে অসন্তোষ তৈরি হয় এমন কাজ থেকে আগামীতে বিরত থাকার কথা জানান হিরো আলম। সেই সঙ্গে বিগত কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান তিনি।
এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন হিরো আলম। তিনি মনে করেন, গান গাইতে নিষেধ করে তার ‘ব্যক্তিগত স্বাধীনতায়’ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ তার ‘হিরো’ নাম পাল্টানোর নির্দেশ দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। যদিও পুলিশ বলছে, হিরো আলমকে ‘বিকৃত’ভাবে গান প্রচার করতে নিষেধ করেছে তারা।
হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার বিষয়ে গত বুধবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলনকক্ষে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ। সে সময় তিনি বলেন, হিরো আলমের বিরুদ্ধে ডিবি সাইবার ক্রাইম বিভাগের কাছে অজস্র অভিযোগ। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডাকা হয়। তার কথা আর কী বলব! পুলিশের যে পোশাক, যে ধরন, ডিআইজি–এসপির যে পোশাক, তা না পরে কনস্টেবলের পোশাক পরে ডিআইজি, এসপির অভিনয় করছে।
ডিএমপি কমিশনার শিল্পী সমিতিতে বলেছেন, পুলিশের পোশাক পরে অভিনয় করতে হলে অনুমতি নিতে হবে। হিরো আলম শিল্পী সমিতির সদস্য নন। অথচ তিনি অনুমতি ছাড়া পুলিশের পোশাক পরছেন। কনস্টেবলের ড্রেস পরে এসপি–ডিআইজির অভিনয় করছেন। এটা তিনি জানেনও না।
এরপর হিরো আলমকে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার। নোটিশে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হিরো আলমের মিউজিক ভিডিও ‘আমারো পরাণও যাহা চায়’, ‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি’, ‘মোগোয়া জাগোমম্বে’সহ নানা মিউজিক ভিডিও নির্মাণের নামে গানকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও বিকৃত এবং অশুদ্ধ বাংলা শব্দ উচ্চারণ, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য পরিবেশন ও অশালীন পোশাক পরিহিত দৃশ্য ধারণ প্রচার করে দেশের মানক্ষুণ্ন করা হচ্ছে।