উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

Slider খেলা


তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে শনিবার (১৬ জুলাই) রাতে ক্যারিবীয়ানদের ৪ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। নিকোলাস পুরানদের ১৭৮ রানের জবাব দিতে নেমে ৬ উইকেট হারিয়ে ৯ বল হাতে রেখে জয় পেয়েছে তামিম ইকবাল বাহিনী। এ নিয়ে বাংলাদেশের কাছে ওয়ানডেতে তিনবার হোয়াইটওয়াশ হলো উইন্ডিজ।

গায়ানার স্লো উইকেটে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৩ বল খেলে মাত্র ১ রান করে আলজারি জোসেফের বলে শাই হোপকে ক্যাচ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্ত আউট হওয়ার পর লিটন তাস ও তামিম ইকবাল মিলে ৫০ রানের জুটি গড়ে তোলেন। এ সময় ৩৪ রান করে মতির বলে ক্যাচ তুলে দেন তামিম। মতির বলে লিটন বিদায় নেন হাফসেঞ্চুরি করার পরপরই। ৬৫ বলে তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও একটি ছয়ের মার।

লিটন আউট হন দলীয় ২৪.৩ ওভারে। এক বল পর ডাক দিয়ে ফেরেন আফিফ হোসেনও। ছয় নম্বরে নেমে মোসাদ্দেক করেন ১৪ রান। তিনিও সেই মতির শিকারে পরিণত হন। টেস্ট মেজাজে খেলতে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে স্টাম্পিং করেন শাই হোপ। পুরানের লেগের বল উইকেট ছেড়ে খেলতে এসে নিজের উইকেট হারান রিয়াদ। ৬২ বলে তিনি করেন ২৬ রান। বাকিটা পথ পাড়ি দেন নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে। দুজনে গড়েন ৩২ রানের জুটি। সোহান ৩২ ও মিরাজ করেন ১৬ রান। স্বাগতিকদের হয়ে মতি ৪ উইকেট নেন। পুরান ও আলজারি জোসেফ পান একটি করে উইকেট।

এর আগে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাইজুল-মুস্তাফিজ মিলে বোলিংয়ে বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দিয়েছিলেন। মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল স্বাগতিক দল। তবে অধিনায়ক নিকোলাস পুরান ও এই ম্যাচেই প্রথম খেলতে নামা কিসে কার্টি মিলে দারুণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শতরানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচান। দুজনের ৬৭ রানের জুটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাঁচে বড় লজ্জার হাত থেকে। কিন্তু নাসুম আহমেদ কার্টিকে বাধ্য করেন টাইগার দলপতি তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে। ৩৩ রানে ফেরেন কার্টি।

তবে ক্রিজে আসা রোভম্যান পাওয়েলকে দেখে মনে হচ্ছিল ছন্দে আছেন। কিন্তু বাংলাদেশকে দুশ্চিন্তামুক্ত করেন তাইজুল। টানা দুই ওভারে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ শুরু করা তাইজুল ফের বোলিংয়ে এসেই ফেরান ১৮ রান করা পাওয়েলকে। কার্টি ও পাওয়েলের বিদায়ের পর অধিনায়ক পুরান নিঃসঙ্গ যোদ্ধার মতো সংগ্রাম চালিয়ে যান। তাইজুলের বলে আউট হওয়ার আগে ১০৯ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও দুটি ছক্কা।

এই ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ঘাতক হিসেবে আবির্ভূত হন দুই বছর পর দলে ফেরা তাইজুল। নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পান ক্যারিয়ারের দশম ওয়ানডে খেলতে নামা তাইজুল। এই বাঁহাতি টানা দুই ওভারে ফেরান প্রতিপক্ষের দুই ব্যাটারকে। কিংয়ের পর স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন শাই হোপ। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে বল করতে আসা মুস্তাফিজও তুলে নিয়েছেন উইকেট। বাঁহাতি এই স্পিনার নিজের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই ফেরান ওপেনার ব্রেন্ডন কিংকে। এই বাঁ-হাতির বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান তিনি। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৮ রান। জ্বলে উঠে আগের দুই ম্যাচে তেমন কিছু করতে না পারা কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ নিজের তৃতীয় ওভারে ফিরিয়ে দেন চার রান করা শামারাহ ব্রুকসকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে বলার মতো রান পাননি আর কেউই। তাইজুলের ঘূর্ণির কোনো জবাবই জানা ছিল না তাদের। ১০ ওভার বল করে ২৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। ব্রেন্ডান কিংকে দিয়ে শিকার শুরু করা তাইজুল থামেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক পুরানকে ফিরিয়ে। মাঝখানে নেন শাই হোপ, পাওয়েল, কিমো পলের উইকেট। আগের দুই ম্যাচে এক উইকেট পাওয়া মুস্তাফিজ এদিন নেন দুই উইকেট। দারুণ মিতব্যায়ী ছিলেন তিনি। মোসাদ্দেক হোসেন ও নাসুম আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *