বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম জানিয়েছেন, সাংবাদিকরা অন্যায় করলে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে আইন হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজশাহীতে এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
‘প্রেস কাউন্সিল আইন ও আচরণবিধি এবং তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ’ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সার্কিট হাউজে আয়োজিত কর্মশালায় ৪৪ জন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।
নতুন আইন সম্পর্কে বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেন, নতুন এই আইনে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে এক দিনের জেলের পক্ষপাতী। জেলে গেলে তার মনে হবে যে আমার কাজটা অন্যায় হয়েছিল। আর করা যাবে না। এই আইনটা কেবিনেটে আছে। আশা করছি, আগামী সংসদেই পাস হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রেস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মনে করেছিলেন, সাংবাদিকেরা এমন শ্রেণির লোক যাদের জন্য তিরস্কারই বড় শাস্তি। প্রেস কাউন্সিল আইনে কোনো অন্যায় করলে বেশির ভাগ সাংবাদিককেই তিরস্কার করা হয়ে থাকে। মানি লোকের জন্য তিরস্কারই বড় শাস্তি। এটা তাদের আত্মসম্মানে বাধবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন আইন প্রয়োজন হচ্ছে।
বিচারপতি বলেন, এখন যে কেউ সাংবাদিক পরিচয় দিচ্ছেন। তারা মানুষকে ব্ল্যাকমেল করছেন। সাংবাদিকতার নামে ‘সাংঘাতিকতা’ চলছে। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য অপমানজনক। এ কারণে সাংবাদিক কারা, তা নির্ধারণ করা যেমন জরুরি হয়ে পড়েছে, তেমনি নতুন আইনেরও দরকার হচ্ছে।
প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্যই সাংবাদিকতা। নামিদামি অনেক পত্রিকার সম্পাদকের আত্মীয়রা সাংবাদিক পরিচয় দেন। তারা তো আসলে সাংবাদিক নন, অন্য কাজ করে বেড়ান। এ রকম কেউ সাংবাদিক হিসেবে প্রেস কাউন্সিলে তালিকাভুক্ত হতে পারবেন না। সাংবাদিকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হবে গ্র্যাজুয়েশন। প্রত্যেকের ছয় মাস পরপর কাজকর্ম ভেরিফিকেশন করা হবে।
কর্মশালা পরিচালনা করেন প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. শাহ আলম। রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাবিহা সুলতানার সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আশরাফুল ইসলাম।