উদ্বোধনের তিন দিন আগে অর্থাৎ ২২ জুন শেষ হবে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ‘টুকটাক’ কাজ। বিদ্যুৎ সংযোগের কাজও শেষ। আজ সোমবার মাওয়া প্রান্তের দুই পাশের বাতি জ্বালানো হতে পারে। ২২ জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ করে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেবে। এ বিষয়ে সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন বলেন, প্রকল্প কর্তৃপক্ষ শেষ মুহূর্তের কাজ করছে। ২২ জুনের মধ্যে সব কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে বাংলাদেশসহ অন্তত ২০টি দেশের মেধা কাজ করেছে। অর্থাৎ ২০ দেশের বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী, টেকনিশিয়ান ও কর্মীর মেধাশ্রমে এই পদ্মা সেতু। এই সেতু যেসব উপকরণে গড়ে উঠেছে, তাও বহুজাতিক। মূল সেতুর কাজে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, লুক্সেমবার্গ, সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়া নানা উপকরণ রয়েছে। এর বাইরে সেতুর কাজে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসসহ আরও অনেক দেশের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
গতকাল প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, পদ্মা সেতুতে ৯৬ হাজার কিলোনিউটন ক্ষমতাসম্পন্ন ভূমিকম্প নিরোধক বিয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এই ভূমিকম্প নিরোধক বিয়ার পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চার্টার বিমান ভাড়া করে পাঠানো হয়। এতে কেবল বিমান ভাড়ায় খরচ হয়েছে ২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ৪ হাজার টন ক্ষমতাসম্পন্ন ক্রেন ব্যবহার করা হয়েছে। অত্যাধুনিক হ্যামারটির ক্ষমতা ৩ হাজার ৫০০ টনের।
জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে যানবাহনের ওজন মাপার জন্য এখনো এক্সেল লোড সেন্টার বসানো হয়নি। এ জন্য সময় লাগবে। তবে এতে সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না। পদ্মার টোল আদায়ের জন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হতে আরও ৬ মাস লাগতে পারে। আপাতত ম্যানুয়ালি টোল আদায় করা হবে। পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত স্টিলের উপকরণ এবং কলকবজার প্রায় সবই বিদেশ থেকে এসেছে। কংক্রিটের পথের ওপর প্রথমে দুই মিলিমিটারের পানি নিরোধক একটি স্তর বসানো হয়েছে, যা ওয়াটারপ্রুফ মেমব্রেন নামে পরিচিত। ৫৬০ টন পানি নিরোধক উপকরণ এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। সেতুর পাশে রেলিংয়ের অ্যালুমিনিয়ামও এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে। ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকল্পে ব্যবহৃত ৫-২০ মিলিমিটারের সোয়া পাঁচ লাখ টন পাথর এসেছে। আমিরাত থেকে কিছু অ্যালুমিনিয়ামও আনা হয়েছে।