রাজধানীর ওয়ারীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসা মোটরসাইকেল আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আটক তিনজনের নাম উল্লেখ করে মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে অজ্ঞাত সাড়ে চারশো জনের বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. আলী হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা আসামিরা হলেন- মোটরসাইকেলচালক বার্তা বিচিত্রা নামক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সোহাগ-উল ইসলাম রনি, তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশান ভুইয়া ও শ্যালক ইয়াসির আরাফাত ভুইয়া।
মঙ্গলবার (৭ জুন) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম।
তিনি জানান, রাজধানীর ওয়ারীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধার করতে আসা আরও দুই পুলিশ সদস্যকেও মারধর করে আসামিরা।
আহত সার্জেন্ট আলী হোসেনের হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় আহত অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক উৎপল চন্দ্র।
জুরাইন রেলগেট এলাকায় মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল থেকে তিন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্য কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুরের অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়েছে। মামলা নং ১১। আগামীকাল বুধবার আটক তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
আহত তিন পুলিশ সদস্যের মধ্যে সার্জেন্ট আলী হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। তিনি রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জুরাইন রেলগেট সড়কের উল্টোদিক দিয়ে স্বামী ইয়াসিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে আসছিলেন অ্যাডভোকেট নিশাত। এসময় সার্জেন্ট আলী হোসেন ও ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজ তাদের গতিরোধ করেন। নিশাত নিজেকে অ্যাডভোকেট পরিচয় দিয়ে সার্জেন্ট আলী হোসেনের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে ইয়াসিন মোটরসাইকেল থেকে নেমে সার্জেন্ট আলী হোসেনকে ধাক্কা দেন। এসময় অ্যাডভোকেট নিশাত চিৎকার শুরু করলে পাঠাও ও অটোচালকরা সার্জেন্ট আলী হোসেনের ওপর হামলা করেন।
খবর পেয়ে শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উৎপল দত্ত অপুসহ ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে এবং ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর করে। পরে আহত পুলিশ সার্জেন্ট আলী হোসেনসহ তিন পুলিশ সদস্যকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই ট্রাফিক ওয়ারী জোনের এডিসি বিপ্লব কুমার বলেন, ইয়াসিন নামে এক মোটরসাইকেল আরোহীর কাগজপত্র দেখতে চায় ট্রাফিক পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ান ইয়াসিন। এসময় তাকে আটক করে পুলিশ বক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্থানীয়রা ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন।