বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সর্বত্রই ক্ষমতাসীনদের মিথ্যার বেসাতি। মিথ্যার বাড়াবাড়ি কখনোই কোনো সুসংহত বিজয় আনতে পারে না। এদের জারক রস ফুরিয়ে এসেছে। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পাতা ঝরতে শুরু করেছে, এরা এখন ঝরা পাতা। তাই লুটপাট আর রক্তপাতের ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে কোনো রকমে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।
আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গতকালের বক্তব্য প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথা শুনে মনে হয়েছে তিনি শুধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নন, বিএনপিরও বোধ হয় উপদেষ্টা। তিনি সর্বদা বিএনপিকে নিয়ে যে চিন্তায় থাকেন তাতে মনে হয় তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তিনি ফেয়ার নির্বাচন বলতে ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী’র কথা বুঝিয়েছেন কিনা তা বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, কোনো চক্রান্ত দিয়ে সংগ্রামী জনগণকে নতিস্বীকার করানো যাবে না। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে এবং ব্যালট পেপারই হবে ভোটদানের পদ্ধতি। রিজভী বলেন, এ সরকারের পতন অত্যাসন্ন। সরকারের পতনের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের জন্য একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে তোলা যাবে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ফেয়ার নির্বাচনের একটি আওয়ামী ভার্সন রয়েছে, যা ১৪ বছরে দেশের মানুষ দিব্যচোখে অবলোকন করেছে। তার ফেয়ার নির্বাচনের সংজ্ঞা অনুযায়ী সুষ্ঠু ভোট হলো-সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে জনগণকে কাবু করতে সব শক্তি নিয়োগের মাধ্যমে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিনা ভোটের নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের নিশিরাতের নির্বাচন।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচন ইভিএমে হবে এবং নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকার যে কথা আপনারা বলেছেন তাতেই আপনার আগাম বার্তা জনগণ স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে; আগামী নির্বাচন হবে মহাজালিয়াতির ও দস্যুবৃত্তির।
সোয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, দেশব্যাপী সোয়াবিন তেল নিয়ে যে তেলেসমাতি চলছে তাতেই বোঝা যায়-লুণ্ঠনের কর্মসূচি ছাড়া সরকারের অন্য কোনো কর্মসূচি নেই। বলা হচ্ছে তেলের দাম বাড়িয়ে সরকার মুনাফাখোরদের সুযোগ করে দিচ্ছে। একেবারেই ভুল তথ্য। সরকার এবং মুনাফাখোর একাকার। আলাদা ভাবার কোনো অবকাশ নেই।
বিএনপি এই নেতা আরও বলেন, তেল আমদানিকারক বড় পাঁচটি কোম্পানি সবাই সরকারের সঙ্গে যুক্ত। সরকারই মুনাফাখোর, মুনাফাখোরই সরকার। এ কারণেই সরকারের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য মাফিয়ার মতো। মাফিয়ারা নিজের শক্তিতে বলিয়ান। এরা কাউকে সুবিধা দেয় না, নিজেরা সুবিধাভোগীর একটি বিশেষ চরিত্র হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমান আওয়ামী কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামগ্রিক চরিত্র এটি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্মসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা সরাফাত আলী সপু ও আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ।