রমজানের শেষে করণীয়

লাইফস্টাইল


রহমত বরকত ক্ষমা পাওয়া ও গুনাহ থেকে মুক্তির মাস রমজান শেষ হয়ে এলো। এ মাস পাপ থেকে মুক্ত হওয়ার। আল্লাহ রব্বুল আলামিন এ মাসে তাঁর ক্ষমার দুয়ার অবারিত করে দেন। রোজা রাখার বিনিময়ে আল্লাহ তাঁর বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন। তারাবি নামাজ আদায়, বেশি বেশি নফল ইবাদত ও দান-সদকার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট হয়। রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মুমিন বান্দার জন্য অগণিত কল্যাণ লাভের মূল্যবান সময়।

রসুল (সা.) এ মাসে সবচেয়ে বেশি ইবাদত-বন্দেগি করতেন। বিশেষ করে রমজানের শেষ দশক তিনি এত বেশি ইবাদতে মগ্ন হতেন, যা তিনি বছরের অন্য সময় করতেন না। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যখন রমজানের শেষ দশক আসত নবীজি তখন ইবাদতের জোর প্রস্তুতি নিতেন, নিজে রাত জেগে ইবাদত করার পাশাপাশি পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে তুলতেন।’ (বুখারি)।

‘শবেকদর’ তালাশ করা : রসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি শবেকদরের রাতের সন্ধান পেতে চায় সে যেন রমজানের শেষ দশকে তা খুঁজে নেয়।’ (বুখারি)। নবীজি (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোয় শবেকদর অন্বেষণ কর।’ (বুখারি)।
ইতিকাফ করা : ইতিকাফ হলো আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সান্নিধ্য লাভ। আল্লাহকে যে কাছে পেতে চায় তার জন্য অন্যতম উপায় হলো ইতিকাফ করা। দুনিয়াকেন্দ্রিক সব ঝামেলা পেরেশানি থেকে নিজেকে মুক্ত করে আল্লাহর জন্য ইবাদতে মশগুল থাকা। আল্লাহও সাড়া দেন তাঁর বান্দার এ একাগ্রতায়। রসুল (সা.) তাঁর জীবদ্দশায় সব সময় রমজানে ইতিকাফ করে গেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুক-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১২৫)

সাদাকাতুল ফিতর আদায় : শেষ দশকের অন্যতম আমল সাদাকাতুল ফিতর আদায়। সামর্থ্যবান সব নারী-পুরুষ, ছোট-বড় সবার জন্য রসুল (সা.) এটা ফরজ করেছেন। সেই সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছেন তা যেন ঈদের নামাজের জামাতের আগেই আদায় করা হয়। (বুখারি)। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) সাদাকাতুল ফিতর নির্ধারণ করেছেন যাতে এটা রোজাদারদের রোজার ভুলত্রুটি ও অশালীন কাজের ও আচরণের ক্ষতিপূরণ হয় এবং অসহায় ও দরিদ্র মানুষের খাবারের সুবন্দোবস্ত হয়।’ (আবু দাউদ)। সুতরাং আমাদের সবার উচিত ঈদ জামাতের আগেই সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা।

সাদাকা করা : এ মাসে একটি দানের বিনিময়ে ৭০ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। তাই আমাদের সবার উচিত বেশি বেশি দান-সদকা করা। কোরআন ও হাদিসের আলোকে জাকাত আদায় করা। আমাদের মনে রাখতে হবে, জাকাত গরিবের হক। নিঃস্ব ফকির, মিসকিন, দাসমুক্তির জন্য, যারা জাকাত আদায়ে নিয়োজিত তাদের, আল্লাহর পথে যারা নিজেদের ব্যাপৃত করে ও মুসাফিরদের জাকাত দেওয়া আমাদের প্রধান কর্তব্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *