অনাস্থা ভোট সামনে রেখে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) তার ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। ভাষণে তিনি অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটের বিষয়ে কথা বলবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সুপ্রিমকোর্টের আদেশে নতুন পুনর্বহাল হওয়া মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পাশাপাশি জাতির উদ্দেশে তিনি ভাষণ দেবেন। ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের পার্লামেন্টারি কমিটিরও বৈঠক হবে এদিন।
গত ৩ এপ্রিল ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর তোলা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাশিম সুরি। এরপর ইমরান খানের পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। কিন্তু এই দুই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিরোধীরা। চার দিন শুনানির পর বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ওই দুই সিদ্ধান্ত বাতিল করে পার্লামেন্ট পুনর্বহাল করার আদেশ দেন সুপ্রিমকোর্ট।
সংক্ষিপ্ত রায়ে আদালত বলছে, অনাস্থা ভোট বাতিল করে দেওয়ার ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্ত সংবিধান ও আইনের বিরোধী। তার কোনো আইনগত বৈধতা নেই। যে কারণে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো শনিবার (৯ এপ্রিল) ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ক্রিকেট মাঠ থেকে রাজনীতিতে এসে প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইমরান খানকে এখন আইনসভায় আস্থার প্রমাণ দিতে হবে। যদিও সেখানে তার হার আগেই এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে আছে!
৩৪২ আসনের পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে অন্তত ১৭৩ জন সদস্যের সমর্থন পেতে হবে। কিন্তু তার বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব তোলার আগেই ১৭৭ জন সদস্যের সমর্থন জড়ো করে রেখেছে।
সেই লজ্জা এড়াতে পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক গত ৩ এপ্রিল অভাবনীয় এক রাজনৈতিক কৌশলের মঞ্চায়ন ঘটান। যাকে ক্রিকেট মাঠের গুগলি বলের সঙ্গে তুলনা করে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
কিন্তু ইমরান খানের এই কৌশল ভেস্তে দিয়েছেন পাকিস্তানের শক্তিশালী বিচারবিভাগ। এদিন বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল বলেন, অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব ওঠার পর ২৮ মার্চ অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছিল। ডেপুটি স্পিকার ৩ এপ্রিল ওই প্রস্তাব বাতিল করে দেন। তার ওই রুলিং ছিল অসাংবিধানিক।
পাকিস্তানের বিরোধী দলীয় নেতা শাহবাজ শরিফ বলেন, মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করেছেন আদালত। আর এ রায়কে জনগণ ও সংবিধানের বিজয় হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পিপিপি নেতা বেলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি বলেন, পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ও সংবিধান নিরাপত্তা পেয়েছে। আল্লাহর ইচ্ছায়, এখন অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংস্কার করব। এখন থেকে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।