বিবিসি বাংলা সংলাপে অংশ নিয়ে প্যানেল আলোচকরা বলেছেন, রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চা ও জবাবদিহিতার পরিবেশ নেই বলেই বর্তমানে দেশে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা আরও বলেছেন, জনগণের স্বার্থে দুই প্রধান দলের দুই নেত্রীকে এক টেবিলে আলোচনায় বসতে হবে। শনিবার রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের একশ আটতম পর্ব। অনুষ্ঠানে প্যানেল সদস্য হিসেবে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রীর গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তাজমেরি এস এ ইসলাম এবং বেসরকারি সংগঠন নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশী কবির। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলছে, সংলাপ প্রয়োজন। কিন্তু সংলাপের আগে সবচেয়ে বড় সমস্যা, পেট্রলবোমার হাত থেকে জীবন বাঁচানো। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে বিএনপিকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গ ছেড়ে সন্ত্রাস বন্ধ করে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি যদি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, রাজনীতিবিদদের নিজের দিকে তাকাতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য রোল মডেল হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে শওকত মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে আবার সংলাপের প্রস্তাব দেয়ায় নতুন করে সংলাপের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তার সাত দফায় সংবিধানের সংশোধনী এনে নির্বাচনের দিকে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সরকারের দিক থেকে অনড় অবস্থানের কারণেই তিনি বলতে পারেন না সংলাপে গেলেই কর্মসূচি তুলে নেয়া হবে। তিনি বলেন, অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রেস রিলিজ আসলেও নিরাপত্তা থাকছে না। শওকত মাহমুদ আরও বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন একটি চাতুরিপূর্ণ নির্বাচন। বিএনপির সেখানে অংশ নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোন পরিবেশই নেই। তিনি আরও বলেন, রাজনীতিবিদদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের অভাবই সঙ্কটের কারণ। ড.তাজমেরি এস এ ইসলাম বলেন, জনগণের স্বার্থেই দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, দেশে রাজনীতির অবাধ, মুক্ত চর্চার পরিবেশ নেই বলেই অজ্ঞাত স্থান থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিতে হচ্ছে। তাজমেরি এস এ ইসলাম আরও বলেন, রাজনীতিতে সহনশীলতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের অভাব এবং ক্ষমতায় আকড়ে থাকার প্রবণতা এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আলোচনায় অংশ নিয়ে খুশী কবির বলেন, খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনে নতুন কিছু নেই। উনি রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে জনগণের সামনে না এলে দূরত্ব বেড়ে যাবে এ কারণেই এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই হওয়া দরকার। কারণ জনগণ সঙ্গে থাকলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক চর্চা, জবাবদিহিতার পরিবেশ নেই বলেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।