বাংলাদেশি দুই যুবক ফ্রান্সের আইফেল টাওয়ারে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছেন। এরা ইউক্রেনে অবৈধভাবে ছিলেন দীর্ঘ ৪ বছর ধরে। যুদ্ধের সুযোগে ইউক্রেন থেকে তারা ঢুকে পড়েছেন স্বপ্নের ইউরোপে। ছড়িয়ে পড়েছেন বিভিন্ন দেশে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজনেই বললেন, ২০১৮ সালে রাশিয়ায় বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখার উদ্দেশ্যে রাশিয়াতে ঢুকে ২০০০ ইউরো চুক্তিতে ঢুকে পড়েন ইউক্রেনে। উদ্দেশ্য ছিলো সুযোগ বুঝে ইউরোপে ঢুকবেন।
দুই যুবক আরও বলছিলেন, ইউক্রেন থেকে ইউরোপে ঢুকতে হলে ৫ হাজার ইউরো বা প্রায় ৫ লক্ষ টাকা লাগে। সেই টাকার জোগাড় হয়নি তাই ইউক্রেনেই অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। যুদ্ধের কারণে কোনো টাকা ছাড়াই তারা ঢুকে পড়েছেন ইউরোপে! বর্তমানে আছেন ফ্রান্সে।
যুদ্ধ লাগার পর বাংলাদেশ সরকার ১ দিনের মধ্যে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের পোল্যান্ডে ঢুকতে দেয়ার ব্যাপারে কূটনৈতিক আলোচনার পর সফল হয়। বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে যারাই এসেছেন তাদের পোল্যান্ডে ঢুকতে দেয়া হয়েছে। পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের দূতাবাস দিনরাত পরিশ্রম করে মেদিকা সীমান্তে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশিকে গ্রহণ করে। এরমধ্যে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে বাংলাদেশ দূতাবাসের ভাড়া করা হোস্টেলে আশ্রয় নেয়।
পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসাইন ১৩ মার্চ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলছিলেন, আগামীকাল ৬ জন বাংলাদেশে যাবেন। বাকিরা নিজেদের মতো করে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় চলে গেছেন।
তবে এরা কোথায় গেছে সে সম্পর্কে তিনি জানেন না বলে জানান।
৭০০ এর মতো বাংলাদেশি পোল্যান্ডে ঢুকলেও ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি বাংলাদেশি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছেন।
মেদিকা সীমান্ত থেকেই অনেকে বিভিন্ন দেশের শরণার্থীদের বহন করা বাসে করে বিনা খরচে চলে গেছেন। জার্মানিতে যাওয়া এক যুবক বললেন, মেদিকাতে তিনি ঢুকেন ২ মার্চ, ঢুকেই তিনি জার্মান সরকারের বাস পেয়ে সেটায় উঠে চলে আসেন জার্মানিতে। যুদ্ধের শুরুতে অনিশ্চিত যাত্রা হলেও এখন তিনি নিশ্চিন্ত! ৫ লাখ টাকার কাজ বিনামূল্যে হয়ে যাওয়ায় তিনি অনেক খুশি।
পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসাইন বলছিলেন, এখনো ১/২ জন করে বাংলাদেশি সীমান্ত অতিক্রম করছেন। তাদের দূতাবাসের কোনো সহায়তা প্রয়োজন হলে সেটা আমরা দিচ্ছি।