পেঁয়াজ ও ভোজ্য তেলের দাম কমতে শুরু করেছে

Slider অর্থ ও বাণিজ্য

বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজ ও খোলা ভোজ্য তেলের দাম। সংকট দেখিয়ে এত দিন ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করলেও এখন গায়ের দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বাড়ায় এসব পণ্যের দাম কমে আসছে। ঢাকার বাজারে খুচরায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে পাম তেলের দাম এক সপ্তাহ আগের তুলনায় মণে কমেছে ৭০০ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম কমেছে মণে ৪৫০ টাকা।

গতকাল রাজধানীর কালাচাঁদপুর বাজার, নদ্দা মোড়লবাড়ী বাজার, দক্ষিণ কুড়িল জোহার সাহারা বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমদানি ও দেশি পেঁয়াজ তিন দিন আগের তুলনায় ১০ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি ভালো মানের পেঁয়াজ গত দুই-তিন দিন আগে প্রতি কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা ছিল, সেটি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারত ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, সেটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়।

নদ্দা মোড়লবাড়ী বাজারের বৃষ্টি জেনারেল স্টোরের মো. রিফাত বলেন, ‘গত দুই দিনে কেজিতে পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা কমেছে। এখন পেঁয়াজ প্রচুর আমদানি হচ্ছে, ফলে সামনে আরো কমবে।

জানতে চাইলে শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. মাজেদ বলেন, ‘ভারত ও মিয়ানমার থেকে প্রচুর পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। এখন আমরা পাইকারিতে ভারতের প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা, মিয়ানমারের ৩৮ টাকা এবং দেশি ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি।’

পাইকারিতে কমেছে খোলা ভোজ্য তেলের দাম
অর্থমন্ত্রীর ভ্যাট কমানোর ঘোষণায় পাইকারি বাজারে খোলা ভোজ্য তেলের দাম কমছে। গতকাল চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তে পাম তেল বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি (৩৭.৩৮ কেজি) পাঁচ হাজার ২০০ টাকায়; এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দাম কমেছে ৭০০ টাকা। একইভাবে সয়াবিন তেলের দামও কমেছে মণে ৪৫০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে সয়াবিন তেল ছিল ছয় হাজার ১৫০ টাকা; গতকাল বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার ৭০০ টাকায়।

আড়তদার ও আমদানিকারকরা বলছেন, দুই কারণে ভোজ্য তেলের দাম কমছে। প্রথমত, দাম আরো বাড়তে পারে এমন গুজবে প্রচুর তেল কিনে মজুদ করেছে এক শ্রেণির সুবিধাভোগী। দ্বিতীয়ত, সরকারের ভ্যাট কমানোর ঘোষণা। গতকাল বাজার শুরুর দিন খাতুনগঞ্জে ভোজ্য তেলের ক্রেতা মিলছে না। বেচাকেনা কমায় দামও কমেছে। এভাবে চললে দাম আরো কমবে।

খাতুনগঞ্জের আড়তদার জামাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, দাম যখন বাড়ছিল তখন একটি গ্রুপ প্রচুর তেল কিনে মজুদ করেছে। এখন ভোজ্য তেল কেনার খুচরা ক্রেতা মিলছে না। দাম আরো বাড়বে নাকি কমবে তা নিয়ে সংশয়ে ক্রেতারা। এ দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে তারা বাজারে আসছে না।
খুচরায় গায়ের দামে সয়াবিন বিক্রি

বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন গায়ের দামে বিক্রি হচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। এক লিটার সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঁচ লিটার বিক্রি হচ্ছে ৭৯৫ টাকায়।

ব্যবসায়ী রিফাত বলেন, ‘সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখন এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন দিয়ে যাচ্ছে। পাঁচ লিটারের বোতল দিচ্ছে খুবই কম। এখন তারা কমিশনও কম দিচ্ছে। ফলে লাভ কম হওয়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গায়ের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে।’

দক্ষিণ কুড়িলের জোহার সাহারা বাজারের ভাই ভাই স্টোরের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, দেশি-বিদেশি সব পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। কম্পানিগুলোও তেল দিয়ে যাচ্ছে। ফলে এখন গায়ের দামে সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে।

বাজারের বিসমিল্লাহ জেনারেল স্টোরের ব্যবসায়ী মো. আমির বলেন, সামনে রমজান মাস, তাই পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের চাহিদা বেশি। কিন্তু কম্পানিগুলো এক ও দুই লিটারের বোতল দিয়ে যাচ্ছে।

পাঁচ লিটারের বোতলের সরবরাহ কম থাকার বিষয়ে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন আমাদের টিসিবিকে বেশি সরবরাহ দিতে হচ্ছে। এ কারণে পাঁচ লিটারের বোতল কম করা হচ্ছে। তবে দ্রুত বাজারে পাঁচ লিটারের বোতল সরবরাহ বাড়ানো হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *