একুশের চেতনায় দেশে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলার প্রত্যয় ফখরুলের

Slider রাজনীতি


ভাষা আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে দেশে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, ভয়াবহ একটা ফ্যাসিজম এই দেশের উপরে চলছে- এটাকে সরানো জন্য, আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবার জন্যে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এখানে একটি গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করবো। তার মধ্য দিয়ে সত্যিকার অর্থে আমরা একুশের চেতনাকে বাস্তবায়িত করবো।

এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় বিএনপি মহাসচিব দলের নেতা-কর্মীদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেদিতে এসে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। নেতা-কর্মীদের বুকে কালো ব্যাজ ধারণ করে। নেতৃবৃন্দের সাথে কালো পতাকা হাতে নিয়ে সহস্রাধিক হাজার নেতা-কর্মী শহীদ মিনারে আসে। এ সময় বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, আমিনুল হকসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ভোর ৬টায় বলাকা সিনেমা হলের কাছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমবেত হয়ে প্রভাতফেরী সহকারে প্রথমে আজিমপুর কবরাস্থানে ভাষা শহীদদের কবর জিয়ারত করেন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। সেখানে থেকে নেতৃবৃন্দ প্রভাতফেরী করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন।

ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ জাব্বার, সালাম, বরকতসহ অনেকে সেদিন রাজপথে তাদের রক্ত দিয়ে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষা প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে আত্মত্যাগ করেছিলেন। তারই ফলোশ্রুতিতে আমাদের সেই সময়ে পাকিস্তান আমলে বাংলাকে রাষ্ট্র ভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছিলো।

সম্ভবত বাংলাদেশের এই তরুনেরাই প্রথম, যারা একমাত্র নিজেদের মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আত্ম বিসর্জন দেয়ার এই নজির গড়েছেন। যা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। ৭০ বছর আগে এই ভাষা আন্দোলনের যে মূল চেতনা ছিলো আমাদের স্বাধীকারের চেতনা, সেই চেতনা ছিলো আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার চেতনা, সেই চেতনা ছিলো আমাদের একটি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা, আমরা সবাই সকলে কথা বলতে পারবো, আমরা আমাদের স্বাধীন চিন্তাগুলো প্রকাশ করতে পারবো, আমাদের বাক স্বাধীনতা থাকবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে। সবচেয়ে বড় ইচ্ছাটি ছিলো আমাদের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে সেই চেতনায় আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। শহীদ প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো যুদ্ধে। পরবর্তিকালে আমরা দেখেছি, শহীদ জিয়াউর রহমান প্রথম একুশে পদক প্রবর্তন করেছিলেন। তারপর থেকে একুশে পদক শুরু হয়েছে। দুর্ভাগ্য আমাদের এমন একটি সরকার এদেশের জনগনের ওপরে চেপে বসে আছে যারা জনগনের সমস্ত আশা-আকাংখাগুলো দমন করছে এবং একুশের যে চেতনা সেই চেতনাকে তারা ভুলন্ঠিত করে দিয়েছে। আজকে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে এবং এই দেশের অর্থনীতিকে পুরোপুরিভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং বাংলা ভাষা এখনো সর্বস্তরে প্রচলিত হয়নি।

সরকারের দমনপীড়নের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তিনি অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি হয়ে আছেন। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় দেশ থেকে বহু দূরে নির্বাসিত হয়ে আছেন। অগণিত মানুষ আজকে মিথ্যা মামলায় পড়ে আছে। এই থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *