প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ইসি নিয়োগে ১০ জনের নাম সুপারিশের জন্য বৈঠকে বসেছে সার্চ কমিটি। রবিবার বিকাল পৌনে ৫টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে এ বৈঠক শুরু হয়।
এর আগে শনিবার ২০ জনের প্রাথমিক তালিকা করেছিলেন তারা। সেদিন সুপ্রিমকোর্টের জাজেস লাউঞ্জে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. সামসুল আরেফিন।
এদিন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম-কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
শনিবার বৈঠক শেষে সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, আইনে প্রদত্ত বর্ণিত যোগ্যতা অনুসারে প্রস্তাবিত নব নাম বাছাই শেষে থেকে ২০ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে। আগামী ২/১টি সভায় তালিকা চূড়ান্ত হবে। পরবর্তী সভা রবিবার বিকাল চারটায় অনুষ্ঠিত হবে।
১০ জনের চূড়ান্ত তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরও ২/১টি মিটিং হবে।
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য নাম সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২- এর ধারা ৩ মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হলো।
অনুসন্ধান কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম বৈঠক করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিগত ভাবে নাম চেয়েছিল সার্চ কমিটি। এর প্রেক্ষিতে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বাদে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে তিনশতাধিক নাম জমা পড়ে। এর মধ্যে কমিটি কয়েক দফায় বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করে মতামত নেন। পরে ওয়েবসাইটে ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুমোদন দেওয়া হয়। গত ২৭ জানুয়ারি বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের পর ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আইনটিতে সম্মতি দেন। ৩০ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তারা আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।