সরকারের মদদ ছাড়া কখনো সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া যুবক ইকবাল হোসেন এতদিন কোথায় ছিল? এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এটা তো পরিস্কার পত্র-পত্রিকাগুলো সব দেখেন, দেখলেই বুঝতে পারবেন। এটা সত্য ঘটনা সবাই এটা মেনে, সরকারের মদদ ছাড়া কখনো সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি হয় না। যারা সরকারে থাকে তারাই করে।’
আজ শুক্রবার সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ লেবার পার্টি তার ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৭৪ সালে মাওলানা আবদুল মতিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি প্রতিষ্ঠা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে যে পত্র-পত্রিকায় লেখা হচ্ছে, এই যে ইকবালের কথা কিছুক্ষণ আগে একজন বললেন। ইকবাল নামে একজন বলা যেতে পারে একটা অপ্রকৃতিস্থ এবং মাদকসেবী তাকে ধরা হয়েছে। এটা (ইকবাল) এত দিন কোথায় ছিল? এই বিশ্বাসটা কে করবে? কারা তাকে সেখানে নিল?’
কুমিল্লার ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে সংঘটিত হামলা প্রসঙ্গ টেনে সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে গেল সেখানে আপনারা (সরকার) কোনো পুলিশ পাঠালেন না বা পুলিশ গেল না বা পুলিশ থেকেও কোনো ব্যবস্থা নিল না। কেন এটা হলো? রংপুরের ঘটনায় দেখলাম আমরা একদিকে ওসি, চেয়ারম্যান সবাই মিলে আলোচনা করছে একটা আপোষ করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বাইরে থেকে এসে লোকজন মাঝি পাড়া জ্বালিয়ে দিয়েছে। দুর্ভাগ্য। তাহলে কি আমরা বলব যে, তাদের ছত্রছায়ায় এই ঘটনা ঘটেছে।’
কুমিল্লার ঘটনার পর বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের চরম ব্যর্থতা, সমাজে কোনো মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারেন না। আপনারা (সরকার) কী করছেন? অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করছেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার একেক সময়ে একেকটা বিভাজন তৈরি করে সামনে নিয়ে আসে। স্বাধীনতার স্বপক্ষে ও বিপক্ষের শক্তি, গণতন্ত্রের পক্ষ ও বিপক্ষের শক্তি। এখন তারা ধর্মীয় বিভাজনে নেমে পড়েছে। কি করে মানুষের মূল সমস্যা থেকে তাদেরকে বিভ্রান্ত করা যায়। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, আমরা ভোট দিতে পারি না, আমরা কথা বলতে বলতে পারি না, আমাদের অধিকারগুলো নেই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ধবংস হয়ে গেছে। সেই জায়গাগুলো থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে এসে একটা সাম্প্রদায়িক সংকট, সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি করছে।’
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরা খাতুন জুঁই ও মেজবাউল ইসলামের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী শফিকুল ইসলাম মাসুদ, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এলডিপির একাংশের শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) আহসান হাবিব লিংকন, জাগাপার একাংশের খন্দকার লুতফুর রহমান, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান, সহসভাপতি এসএম ইউসুফ আলী, রামকৃষ্ণ সাহা প্রমুখ।