‘লাবু চৌধুরীতেই ফরিদপুর-২ আসনের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা স্বস্তিতে’ এমন শিরোনাম দিয়ে গত শনিবার গণমাধ্যমে একটি ই-মেইল পাঠানো হয়। এটি আসে সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ শাখার মেইল থেকে। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব শফি উদ্দিন ওই বার্তার প্রেরক। বার্তায় সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে লাবু চৌধুরীর বিষয়ে ইতিবাচক কথাবার্তা লেখা হলেও তার বড় ছেলে আয়মন আকবর বাবলুর বিষয়ে নেতিবাচক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।
সংসদ সচিবালয়ের অফিসিয়াল মেইল আইডি থেকে এ ধরনের বার্তা প্রচারের পর নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ব্যক্তিগত বিষয়ে সরকারি অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের মেইল আইডি ব্যবহার করা যায় কিনা? সংসদ উপনেতার মতো গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতার ঘরের দ্বন্দ্বের বিষয়টি পর্ষদের দায়িত্ব পেতো। আর বর্তমানে লাবু চৌধুরীর নির্দেশে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে সু-শিক্ষিত মানুষ দায়িত্বে আছেন। সেজন্য শিক্ষার উন্নয়ন হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী সাব্বির আলী বলেন, আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরীর সময়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনসহ শত শত নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বর্তমানে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরীর সময়ে এলাকার মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীরা কোণঠাসা অবস্থায় নেই। লাবু চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আজ সু-সংগঠিত। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া বলেন, বাবলু চৌধুরীর সময়ে জামায়াত-বিএনপি’র লোককে দলে ঢুকিয়ে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাদের কোণঠাসা করে রেখেছিলো। অনেক নেতাকর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইমামুল হোসেন তারা মিয়া ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসেনসহ অসংখ্য নেতাকর্মী মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছে। পুরো উপজেলা অশান্ত হয়ে ওঠে তৎকালীন সময়ে। তখন সংসদ উপ-নেতার রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে লাবু চৌধুরী এলাকায় আসেন। তিনি আসার পর এলাকা শান্ত হয়। এখনো এলাকা শান্ত আছে এবং আওয়ামী লীগের নিবেদিত নেতাকর্মীরাও মূল্যায়ন পাচ্ছেন। নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বেলায়েত হোসেন মিয়া বলেন, ২০০৮ ইং সালে আমাদের নেত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সঙ্গে তার বড় ছেলে আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী রাজনীতিতে আসেন। তিনি সবসময় কান কথা শুনতেন। বদমেজাজি ছিলেন, যার জন্য নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অশান্তিতে ছিলেন। আর বর্তমানে উপ-নেতার ছোট ছেলে শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী গুরুত্ব সহকারে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কথা শোনেন। তারপর কাজ করেন। যার জন্য এলাকায় শান্তি ফিরে এসেছে। নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস সোবাহান মাস্টার বলেন, বাবলু চৌধুরীর সময়ে ফরিদপুর-২, আসনের আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বর্তমানে লাবু চৌধুরীর নেতৃত্বে সালথা-নগরকান্দার মানুষ স্বস্তিতে আছে। আমরা নেতাকর্মীরাও এখন ঐক্যবদ্ধ আছি। সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতব্বর বলেন, আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হয়েও বাবলু চৌধুরীর সময়ে অনেকবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে ৮/১০টি মিথ্যা মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বহু ত্যাগী নেতাকর্মী বাবলু চৌধুরীর সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ত্যাগী ও নিবেদিত কর্মীদের দলে স্থান দেয়া হয়নি।
অনেক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ঘর-বাড়ি ছাড়া হয়েছে। যখন নির্যাতন বেড়ে যায়, ঠিক তখন উপ-নেতার কনিষ্ঠপুত্র শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী ফরিদপুর-২, আসনে শান্তির দূত হয়ে আসেন। লাবু চৌধুরীর নেতৃত্বে সালথা-নগরকান্দা আওয়ামী লীগ এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। সংঘর্ষ-মারামারি, খুন-জখম ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আগের তুলনায় নেই বললে চলে। মানুষ এখন শান্তিতে আছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন মিয়া বলেন, আয়মন আকবর বাবলু চৌধুরী যখন সংসদ উপ-নেতার এপিএস ছিলেন, তখন তিনি সালথা-নগরকান্দা চালাতেন। বিএনপি-জামায়াতের লোক তিনি দলে এনে জায়গা করে দিয়েছেন। তখন হাইব্রিডদের দাপটে আমরা কোণঠাসা হয়ে পড়ি। তার আমলে ১১টি মিথ্যা মামলা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। দশ মাস জেল খেটেছি। এ ছাড়াও অগণিত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে তৎকালীন সময়ে। তখন বাবলু চৌধুরীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা। তারপর আমরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাবলু চৌধুরীর বিরুদ্ধে আন্দোলন করি। আন্দোলনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’ বাবলু চৌধুরীকে সালথা-নগরকান্দা থেকে সরিয়ে দেন। পরে ২০১৮ ইং সালে সংসদ উপ-নেতার প্রতিনিধি হিসেবে সালথা-নগরকান্দায় আসেন শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী। তিনি আসার পর থেকেই এখানে শান্তির সুবাতাস বইতে শুরু করে। লাবু চৌধুরীর ৩ বছরে সালথা-নগরকান্দায় কোনো বিএনপি-জামায়াতের লোক আওয়ামী লীগে যোগদান করে নাই। আগের মতো সংঘর্ষ-মারামারি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নাই বললেই চলে। সবমিলিয়ে লাবু চৌধুরী নেতৃত্বে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ আছি এবং শান্তিতে আছি। সংসদ উপ-নেতার রাজনৈতিক প্রতিনিধি শাহদাব আকবর লাবু চৌধুরী বলেন, আমার মা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সালথা-নগরকান্দা ও কৃষ্ণপুরকে নগরে পরিণত করেছেন। আমার মা’ তার সারাটি জীবন সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কাজ করে এসেছেন। আমি আমার মায়ের স্বপ্নপূরণের জন্য ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র হাতকে শক্তিশালী করতে সালথা-নগরকান্দা ও কৃষ্ণপুরের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এক ছাতার নিচে রাখার জন্য তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করছি। বর্তমানে ফরিদপুর-২, আসনের আওয়ামী লীগ বিগতদিনের চেয়ে এখন অনেক শক্তিশালী। আমি আজীবন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চাই।